উত্তরা৷ ভূমিকা : “প্রবেশন হচ্ছে আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির চরিত্র সংশোধনের এমন একটি ব্যবস্থা যেক্ষেত্রে আদালতের শর্তানুযায়ী একজন প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধান অপরাধীকে তার নিজ সমাজে জীবনযাপনের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে সংশোধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়।”
প্রবেশন ব্যবস্থায় ত্রুটি/সীমাবদ্ধতা :
প্রবেশন ব্যবস্থার ব্যাপক সুবিধা সত্ত্বেও এর কিছু ত্রুটি বা সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। এর ত্রুটিসমূহ নিম্নরূপ :
১. দেশের আদালত যদি কোন কারণে সততার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে দাগি অপরাধীও আদালতের দুর্বলতার সুযোগে প্রবেশনের মাধ্যমে মুক্তি পেয়ে যেতে পারে।
২. প্রবেশনকালে অপরাধী ভালো হওয়ার ভান করতে পারে। উদ্দেশ্য তার নিঃশর্ত আশু মুক্তি। অর্থাৎ সে সাময়িক সময়ের জন্য লোক দেখানো সাধুবেশ ধারণ করতে পারে। ফলে প্রবেশনের উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে।
৩. প্রবেশন কর্মকর্তাকে হতে হয় দক্ষ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও আশাবাদী ব্যক্তিত্ব। কেননা তিনি অপরাধীর চরিত্র সংশোধনের দায়িত্বে থাকবেন। এক্ষেত্রে প্রবেশন কর্মকর্তা পক্ষপাতিত্বের আশ্রয় নিতে পারে। অন্যদিকে, অপরাধীর চরিত্র সংশোধনের দায়িত্ব পালন করা খুবই কঠিন কাজ।
৪. প্রবেশন ব্যবস্থায় অপরাধী পুনরায় তার সমাজে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যায়। কিন্তু সমাজে যদি প্রতিকূল অবস্থা বিরাজ করে তাহলে সে পুনরায় অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৫. প্রবেশন ব্যবস্থায় অপরাধীর সংশোধনের ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়। অথচ অভিযোগকারীর স্বার্থ এখানে উপেক্ষিত হয়। যা বিচারের মূল্যবোধকে খর্ব করে। অর্থাৎ অভিযোগকারীর স্বার্থ দেখার এখানে কোন সুযোগ নেই।
উপসংহার : উপর্যুক্ত ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও বর্তমানকালে প্রবেশন ব্যবস্থা যথেষ্ট উপযোগী। এ ব্যবস্থায় অপরাধীর শাস্তি স্থগিত রাখা হয় মাত্র। সমাজের জীবনব্যবস্থাও স্বাভাবিক হয় তাই প্রবেশন ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা থাকলেও এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।