অথবা, ডি. পাল চৌধুরীর মতে তত্ত্বাবধানের কৌশলগুলো কী? তিনি তত্ত্বাবধানের কোন কোন কৌশল বিবেচনায় রেখে মাঠকর্মে কৌশল প্রয়োগের কথা বলেছেন?
উত্তর।। ভূমিকা : তত্ত্বাবধান হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি অধিকতর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিকট থেকে জ্ঞান, নির্দেশনা ও দক্ষতা লাভ করে নিজেদের ত্রুটিবিচ্যুতি,ভুলভ্রান্তি দূর করতে পারে। আর যিনি তত্ত্বাবধানকার্য সম্পাদন করেন তাকে বলা হয় তত্ত্বাবধায়ক।
ড. পাল চৌধুরীর মতে তত্ত্বাবধানের কৌশল
D. Paul Chowdhury কতিপয় কৌশলের কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলো নিম্নরূপ-
১. কর্মী সভা, কনফারেন্স ;
২. অনুসন্ধানকৃতকে পরিদর্শন অথবা অনুসন্ধান করা যদি সে তত্ত্বাবধায়ক থেকে দূরে থাকে।
৩. উদ্দীপক, পুরস্কার ও পদোন্নতি মঞ্জুর।
৪. অনুসন্ধানকৃত এর সাথে পৃথকভাবে সাক্ষাৎকার।
৫. অনুসন্ধানকৃতদের দ্বারা পৃথক সভা, ক্লাস বা অন্য কোন কর্মাবস্থায় একজন তত্ত্বাবধায়কের উপস্থিতি।
৬. অংশীদারিত্বের ধারণা এবং এটি করতে দেয়া।
৭. অনুসন্ধানকৃত তত্ত্বাবধায়ক শিক্ষক অথবা উপদেষ্টা হিসেবে ভূমিকা পালন করা।
ডি. পাল চৌধুরীর তত্ত্বাবধানের যেসব কৌশলের কথা বলেছেন তা তত্ত্বাবধান ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে। তবে এগুলোর সাথে আরো কিছু কৌশল অবলম্বন করে তত্ত্বাবধান কাজ পরিচালনা করতে হয়। যেমন- অংশগ্রহণমূলক কৌশল, সমস্যা সমাধান কৌশল, শিখন কৌশল ইত্যাদি। এসব কৌশল প্রয়োগ করেই মূলত তত্ত্বাবধায়ক তার দায়িত্ব পালন করেন।
মাঠকর্মে কৌশল প্রয়োগে বিবেচ্য বিষয়
D.Paul Chowdhury তত্ত্বাবধানের এসব কৌশল বিবেচনায় এনে মাঠকর্মে যেসব কৌশল প্রয়োগ করা যায়।
ক. বাসমূলক সভা (Supervisory conference) : মাঠকর্মে তত্ত্বাবধানমূলক সভা একটি বহুল প্রচলিত সপ্তাহে বা মাসে একদিন তত্ত্বাবধানমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রয়োজনের তাগিদে আরও তত্ত্বাবধানমূলক সভা হয়ে থেকে।
খ. ব্যত্ত্বি তত্ত্বাবধানমূলক সভা (lndividual supervisory conference) : মাঠকর্মে একজন শিক্ষার্থী এবং একজন তত্ত্বাবধায়ক এর মধ্যে কোন সভা অনুষ্ঠিত হলে তাকে ব্যক্তি তত্ত্বাবধানমূলক দা বলে।
গ. দলীয় তত্ত্বাবধানমূলক সভা (Group supervisory conference) : আমাদের দেশে এ ধরনের দলীয় সভার প্রচলন রয়েছে । এখানে একদল শিক্ষার্থী এবং একজন তত্ত্বাবধায়কের মধ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয় । এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল ।
ঘ. কার্যভার (Assignment ) : কার্যভার তত্ত্বাবধানও একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়কগণ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রতিষ্ঠানের কার্যভার জমা নিয়ে থাকে।
ঙ. আলাপ-আলোচনা (Discussion) : এ কৌশল অনুযায়ী পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তত্ত্বাবধান সম্পাদিত হয়। শিক্ষার্থী ও তত্ত্বাবধায়কের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয় ।
চ. পর্যবেক্ষণ (Observation) : কার্যভার তত্ত্বাবধানও একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়কগণ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রতিষ্ঠানের কার্যভার জমা নিয়ে থাকে।
ঙ. আলাপ-আলোচনা (Discussion) : এ কৌশল অনুযায়ী পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তত্ত্বাবধান সম্পাদিত হয়।শিক্ষার্থী ও তত্ত্বাবধায়কের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়।
চ. পর্যবেক্ষণ (Observation) : পর্যবেক্ষণ কৌশলটি বেশ জনপ্রিয় । এখানে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মাঠকর্মীদের কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করা হয় । একজন তত্ত্বাবধায়ক এ কাজটি করে থাকে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় মাঠকর্মে তত্ত্বাবধানের উপর্যুক্ত কৌশলগুলো ছাড়াও আরও যেসব কৌশল প্রয়োগ করা হয় সেগুলো হলো— প্রসেস, রেকর্ডিং, প্রশ্নকরণ, মূল্যায়ন প্রভৃতি ।