বাংলাদেশের মূলধন বাজারের উন্নয়নের জন্য এ পর্যন্ত গৃহীত পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর ।

[ad_1]

👉 বাংলাদেশের মূলধন বাজারের উন্নয়নের জন্য এ পর্যন্ত গৃহীত পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর ।

উত্তর ভূমিকা : সার্বিকভাবে মূলধন বাজারের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলশ্রুতিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে । বিদেশি বিনিয়োগের অনুকূলে শেয়ার বাজার বিশেষ সুবিধা প্রদানের প্রেক্ষিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার ব্যাপারে অধিকতর আগ্রহ দেখানোর ফলে শেয়ার বাজারে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে । বাংলাদেশে মূলধন বাজার উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপ : মূলধন বাজার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ব্যবস্থাসমূহ নিয়েছে , যা নিয়ে আলোচিত হলো :

১. বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯৯৫-৯৬ সালে ঋণ প্রদানের জন্য ব্যাংকসমূহ তাদের মোট দায়ের শতকরা ১০ ভাগ পর্যন্ত ঋণ প্রদান করতে পারবে বলে অনুমতি প্রদান করেছে । তদুপরি একজন ঋণগ্রহীতাকে সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণদান করা যাবে বলে ব্যাংক অনুমোদন করে । যেখানে ১৯৯৪-৯৫ সালে কোন ঋণগ্রহীতাকে সর্বাধিক ৫ লক্ষ টাকা প্রদান এবং মোট দায়ের শতকরা ৫ ভাগ পর্যন্ত ঋণদানের ব্যবস্থা চালু ছিল ।

২. শেয়ার বাজারের প্রাতিষ্ঠানিক ও দৃঢ় আইনগত ভিত্তি প্রতিষ্ঠাকল্পে ‘ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ‘ গঠন করা হয় । বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং শেয়ার বাজার কার্যক্রম নিয়মিত তত্ত্বাবধান ও মনিটরিং এর মাধ্যমে সুষ্ঠু ট্রেডিং নিশ্চিত করার ব্যাপারে উক্ত কমিশন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ।

৩. শেয়ার বাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরকে বিনিয়োগে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিধিমালা অনেকাংশে শিথিল করেছে ।

৪. বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯৯৩ সালের আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ আইনের আওতায় অ – ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়ন এবং তদারকির দায়িত্ব পালন করে আসছে । এর ফলে দেশের মূলধন বাজারের প্রভূত লাভ করছে একথা বলা যায় ।

৫. দেশের মূলধন বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের ব্যাপারে উৎসাহ সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে , যা নিম্নে বর্ণনা করা হলো :

ক . ১৯৯২-৯৩ সালের ১০ এপ্রিল ‘ সিকিউরিটিজ ট্রেনিং এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট ‘ চালু করা হয় ।

খ . ১৯৯৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ‘ সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি সিস্টেম ‘ চালু করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় ।

গ . ১৯৯৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ‘ অটোমেটেড ট্রেডিং ‘ শুরুকরণ ।

ঘ . ১৯৯৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রিয়েল টাইম রিপোর্টিং ‘ চালুকরণ ।

৬. ১৯৯৫-৯৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক শেয়ার ডিবেঞ্চারের বিপরীতে ব্যাংক ঋণ প্রদানের ব্যাপারে বিস্তারিত নীতিমালা গ্রহণ করেছে । যেমন- তফশিলি ব্যাংকসমূহকে স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার জামানত রেখে এর বাজার মূল্যের শতকরা ৪০ ভাগ পর্যন্ত ঋণ হিসেবে অনুমতি দেয় ।

৭. নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করা , লোন মার্জিন পুনঃনির্ধারণ , মৌল ভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির বাজারে আসার সুবিধার্থে মার্চ , ২০০৯ থেকে ‘ বুক বিল্ডিং পদ্ধতি’তে আইপিও মূল্য নির্ধারণের সুযোগ প্রদান , তালিকাচ্যুত কোম্পানিসমূহের সিকিউরিটিজকে ক্রয়বিক্রয়ের সুযোগ করে দিতে ডি . এস . সিতে সেপ্টেম্বর , ২০০৯ থেকে ওটিসি বা ওভার দি কাউন্টার মার্কেট চালু করা ।

৮. বাজার মধ্যস্থতাকারীদের পুঁজি বাজার সম্পর্কে জ্ঞানদান এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৯ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের অনুমোদিত প্রতিনিধিদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয় ।

৯. পুঁজি বাজারে বিনিয়োগকারী মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং কোম্পানিসমূহের প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের উন্নতিকল্পে ‘ Bangladesh Institute of Capital Market ‘ নামক একটি ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়েছে । এছাড়াও , পুঁজি বাজারের সংস্কার , প্রাতিষ্ঠানিক ও জনসম্পদের উন্নয়ন এবং তদারকি কার্যক্রম আরো উন্নততর করার লক্ষ্যে এসইসি এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ‘ Improvement of Capital Market Governance Programme ‘ নামক একটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে । পুঁজি বাজারে তারল্য বাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আইসিবির উদ্যোগে ২০১১ সালে ৫,০০০ কোটি টাকার ‘ বাংলাদেশ ফান্ড ‘ নামে একটি মেয়াদবিহীন মিউচুয়্যাল ফান্ড গঠন করা হয় ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে , বাংলাদেশের মূলধন বাজারের উন্নয়নের জন্য গৃহীত এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হলে এ বাজার উন্নত হবে ।

[ad_2]