অথবা, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন বাংলাদেশে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠায় কী ভূমিকা পালন করেছে?
অথবা, বাংলাদেশের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠায় ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের গুরুত্ব তুলে ধর।
অথবা, বাংলাদেশের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠায় ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।
অথবা, বাংলাদেশে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠায় ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের গুরুত্ব লিখ।
ভূমিকা : ব্রিটিশগণ এদেশের শাসন ক্ষমতা করায়ত্তের পর হতে উপমহাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। স্থানীয় শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিভিন্নমুখী পরিবর্তন সাধিত হয়। স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সরকার ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং এর সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দিতে ইংরেজ সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করে এবং এসব সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে নানা আইন প্রণয়ন করে।
বাংলাদেশে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠায় ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের ভূমিকা : ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা সুদৃঢ় হয়। এই আইনে নির্বাচন ব্যবস্থাকে সহজ করা হয় এবং যাতে অধিক সংখ্যক ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা করে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে আরো গণতান্ত্রিক করার
চেষ্টা করা হয়। এ আইনে নির্বাচন ব্যবস্থা সহজ করা হয়। নির্বাচিত সদস্যদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা হয় এবং তা দুই- তৃতীয়াংশ দাঁড়ায়। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সে অনুযায়ী বোর্ডগুলোকে প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান না করায় তারা যথাযথ কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেনি। এই আইনের মাধ্যমে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহ দুটি ধারায় বিকাশ লাভ করে। শহরের পৌর এলাকার নানাবিধ সমস্যার সমাধানের উদ্দেশ্যে মিউনিসিপ্যালিটি, কর্পোরেশন এবং বিভিন্ন ধরনের বোর্ড গঠন করা হয়। এ সকল পৌর এলাকার প্রতিষ্ঠানের কাজ ছিল শহরের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, আলোর ব্যবস্থা করা, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করা এবং রাস্তাঘাট নির্মাণ ও মেরামত করা। অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলের জন্য ছিল ইউনিয়ন বোর্ড, লোকাল বোর্ড এবং জেলা বোর্ড। গ্রাম প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব ছিল প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা, রাস্তাঘাট পুল তৈরি ও মেরামত করা এবং স্বাস্থ্য বিষয়ের প্রতি নজর রাখা।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনে বাংলাদেশে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা সুদৃঢ় হয়। সংস্থাগুলোর কাজের পরিধি বিস্তৃত হয়। তাদের উপর সমধিক গুরুত্ব আরোপিত হয়। দেশের শাসনব্যবস্থায় এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা হয় উল্লেখযোগ্য।