অথবা, জ্ঞাতি সম্পর্কের সংজ্ঞা দাও ।
অথবা, জ্ঞতির সম্পর্ক বলতে কী বুঝ?
অথবা, জ্ঞাতি সম্পর্ক কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা : ‘Kinship’ শব্দটি আমেরিকান নৃবিজ্ঞানী Morgan সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন। Kinship শব্দটির শব্দগত অর্থ হলো জ্ঞাতি সম্পর্ক। জ্ঞাতি সম্পর্ক হচ্ছে বংশানুক্রমিকভাবে নির্ণীত মানবসমাজের সামাজিক সম্পর্কের সুনির্দিষ্ট রীতি যা বিবাহ প্রথা তথা যৌনসম্পর্ক এবং রক্ত সম্পর্ক হতে উদ্ভূত।
জ্ঞাতি সম্পর্ক : ইংরেজি ‘Kinship’ শব্দটি এসেছে ‘Kin’ থেকে যার আভিধানিক অর্থ গোষ্ঠী, কুটুম্ব ও জ্ঞাতি। ‘Kin’ অর্থে পূর্বপুরুষের বংশও বুঝায় ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে জ্ঞাতি সম্পর্কে সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাঁদের কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলো :
জ্ঞাতি সম্পর্কের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে রবিন ফক্স (Robin Fox) বলেছেন, “Kinship is simply the relations between kinise persons related by real pulative or fictive consanguinity.” নৃবিজ্ঞানী রিভার্স বলেছেন, “Kinship is the social recognization of biological ties.” বিদ্যা ভূষণ (B. Bhushan) তাঁর ‘Dictionary of sociology’ তে উল্লেখ করেছেন, “The social relationships
deriving from blood ties (real and Supponed) and marriage are collectively referred to as kinship.”
সুতরাং লক্ষণীয় যে, জ্ঞাতি সম্পর্ক প্রধানত তিনটি উপায়ে গড়ে উঠে। এ তিনটি উপায় হচ্ছে :
১. রক্ত সম্পর্কীয় (Consanguinal) জ্ঞাতি সম্পর্ক। যেমন- বাবা, মা, চাচা, মামা, ফুফু, দাদা, দাদী, ভাইবোন ইত্যাদি
২. বৈবাহিক সম্পৰ্কীয় (Affinal) জ্ঞাতি সম্পর্ক। যেমন- স্ত্রী, ছেলের বউ, মেয়ের স্বামী, চাচী, মামী, খালু ইত্যাদি ।
৩. পাতানো (Fictive) জ্ঞাতি সম্পর্ক। যেমন- ধর্ম মা, ধর্ম বাবা, পালক পুত্র ইত্যাদি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পারস্পরিক আত্মীয়তার সম্পর্ককে বুঝাতে জ্ঞাতি সম্পর্ক প্রত্যয়টি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সামাজিক সংগঠনের মূলে এই জ্ঞাতি সম্পর্ক বিদ্যমান। জৈবিক বন্ধন, বিবাহ, দত্তক প্রভৃতির মাধ্যমে জ্ঞাতি সম্পর্কের সৃষ্টি হয়।