হালাকু খান কিভাবে আব্বাসীয় বংশের পতন ঘটেছিলেন?

হালাকু খান ছিলেন চেঙ্গিস খানের নাতি এবং মঙ্গোল সাম্রাজ্যের শাসক। তিনি ১২৫৮ সালে বাগদাদ দখল করে আব্বাসীয় খিলাফতের পতন ঘটান। এই ঘটনার পেছনে অনেক কারণ ছিল।

  • আব্বাসীয় খিলাফতের দুর্বলতা: আব্বাসীয় খিলাফত তখন অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছিল। খলিফারা আর আগের মতো ক্ষমতাশীল ছিলেন না। তারা প্রায়ই সামরিক নেতাদের অধীনস্থ ছিলেন।
  • মঙ্গোলদের আক্রমণ: মঙ্গোলরা তখন মধ্যপ্রাচ্য অভিযানে নেমেছিল। তারা ইতিমধ্যেই পারস্য, সিরিয়া ও জর্দান জয় করেছিল। বাগদাদ ছিল তাদের লক্ষ্য।
  • খলিফার ভুল সিদ্ধান্ত: খলিফা আল-মুসতাসিম ছিলেন একজন অবিবেচক শাসক। তিনি মঙ্গোলদের সাথে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা না করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।

হালাকু খান ১২৫৬ সালে মঙ্গোল বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে বাগদাদের দিকে অগ্রসর হন। খলিফা আল-মুসতাসিম তার প্রতিরোধ করার জন্য একটি সেনাবাহিনী গঠন করেন। তবে মঙ্গোলদের কাছে তাদের পরাজয় অনিবার্য ছিল।

১২৫৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গোলরা বাগদাদে পৌঁছায়। তারা শহরটিতে প্রবেশ করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। তারা বাগদাদের অধিবাসীদের নির্বিচারে হত্যা করে। মসজিদ, প্রাসাদ ও গ্রন্থাগার ধ্বংস করে দেয়।

২২ ফেব্রুয়ারি খলিফা আল-মুসতাসিমকে বন্দী করা হয়। হালাকু খান তাকে কম্বলে মুড়ে তার উপর ঘোড়া চালিয়ে দেন। এভাবে খলিফা আল-মুসতাসিমের মৃত্যু হয়।

হালাকু খানের বাগদাদ দখলের ফলে আব্বাসীয় খিলাফত বিলুপ্ত হয়ে যায়। তবে খলিফাদের বংশধররা মামলুক শাসিত মিশরে অবস্থান করে ১৫১৭ সাল পর্যন্ত ধর্মীয় ব্যাপারে কর্তৃত্ব দাবি করতে থাকেন।

হালাকু খানের বাগদাদ দখল মুসলিম বিশ্বের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি মধ্যপ্রাচ্য ও ইসলামী বিশ্বের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশে ব্যাপক পরিবর্তন আনে।