স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য লিখ ।

উত্তর ঃ ভূমিকা : স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা সমাজ সেবার অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। দেশের ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য ও বেকারত্ব, বিমোচন, জনস্ফীতি রোধসহ অন্যান্য সামাজিক সমস্যা সমাধান ও সম্পদের স্বল্পতা কাটিয়ে উঠে বিদেশ নির্ভরতা কমিয়ে জাতীয় উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে বেগবান করার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রয়োজনীয়তা
অপরিসীম। অন্যান্য সংস্থার মত স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা ও কতকগুলো লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে প্রসারিত করে থাকে।
→ স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থায় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের ভিত্তিকে তার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে । উক্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহের কিছু নিম্নে তুলে ধরা হলো :
১. দারিদ্র্য বিমোচন ঃ স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন। এ দেশের দারিদ্র্য পীড়িত জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, ঋণ ও সচেতনতার মাধ্যমে জীবন মানোন্নয়নে সার্বিকভাবে সহায়তা করে থাকে। ফলশ্রুতিতে দারিদ্র্য বিমোচন বেশ অগ্রসর হয়।
২. পুনর্বাসনে সহায়তা ঃ আমাদের সমাজে অগণিত অনাথ, অসহায়, দুঃস্থ, শিশু ও নারী রয়েছে। আবার প্রতিবন্ধীদের সংখ্যাও কম নয়। তাদেরকে পুনর্বাসনে সহায়তা করা ও স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থার অন্যতম উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
৩. জনগণকে সুসংগঠিতকরণ : সুসংগঠিত জনগণ যেকোনো সমস্যার মোকাবেলা করতে সক্ষম। ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম বিঘ্ন হয় না। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা গ্রাম-শহরের বেকার তরুণ-তরুণীদের সুসংগঠিত করে থাকে।
৪. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা ঃ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি বৃত্তিমূলক ও কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এই সংস্থা করে থাকে। তাই সমাজে দ্রুত জনশক্তির আধিক্য পরিলক্ষিত হয়
৫. স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন ঃ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন রোগব্যাধি লেগেই থাকে। এই স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নকে লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছে। যার কারণে এটি স্বাস্থ্য সচেতনতা, পুষ্টি ও রোগ নিরাময় ব্যবস্থা সম্প্রসারণসহ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
৬. নেতৃত্বের জন্মদান ঃ গ্রাম উন্নয়নে যোগ্য নেতৃত্বের একান্ত অভাব। এই সংস্থা তার বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে দক্ষ কর্মীর সৃষ্টি করে। যারা গ্রামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
৭. কর্মসংস্থানের সৃষ্টি ঃ বাংলাদেশে স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হচ্ছে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা। এ জন্য এটি লক্ষ্যভুক্ত জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও ঋণদানের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কাঁচামাল সরবরাহ করে কর্মসংস্থানের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে বেশি আগ্রহী।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম সহায়ক শক্তি। তাই বলা যায়, সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সুষ্ঠু সমন্বয়ে দেশের কল্যাণ সাধন সম্ভব হতে বাধ্য।