অথবা, স্থানীয় রাজনীতির বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধর।
অথবা, স্থানীয় রাজনীতির বৈশিষ্ট্য লিখ।
অথবা, স্থানীয় রাজনীতির প্রকৃতি উল্লেখ কর।
অথবা, স্থানীয় রাজনীতির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : সরকারি কর্তৃপক্ষ ও সরকারের সাথে সম্পর্কযুক্ত জনগণের জীবন ও কার্যাবলিই হচ্ছে রাজনীতি। আর স্থানীয় জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষার চাহিদাকে ভিত্তি করে যে রাজনীতির সৃষ্টি হয় তাকেই স্থানীয় রাজনীতি বলা হয়।
স্থানীয় রাজনীতির প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য : স্থানীয় রাজনীতি যেহেতু স্থানীয় কোনো এলাকাকে কেন্দ্র করে আবির্ভূত হয়, তাই স্থানীয় রাজনীতির প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য স্থানীয় বিষয়াদিকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। নিম্নে স্থানীয় রাজনীতির প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো :
১. জনগণই মূল উৎস : স্থানীয় রাজনীতিতে স্থানীয় জনগণই মূল উৎস হিসেবে কাজ করে। কেননা জনগণ ছাড়া রাজনীতি অর্থহীন। এভাবে স্থানীয় জনগণ ছাড়াও স্থানীয় রাজনীতি মূল্যহীন। সেজন্য স্থানীয় রাজনীতি সম্পাদিত হয় জনগণের মতামতকে কেন্দ্র করে।
২. গণতন্ত্রের চর্চা : স্থানীয় রাজনীতিতে যেহেতু জনগণ একটি প্রধানতম অনুষঙ্গ সেহেতু বলা যায়, স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠিত রাজনীতিতে গণতন্ত্রের চর্চা হয়। স্থানীয় রাজনীতি জনগণকে রাজনৈতিক সচেতনতা সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান দান করে গণতান্ত্রিক নীতিসম্মত সমাজ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
৩. জাতীয় রাজনীতির সাথে সম্পর্কযুক্ত : চরিত্রগত দিক হতে ভিন্নধর্মী হলেও স্থানীয় রাজনীতি আঞ্চলিক কিংবা জাতীয় রাজনীতি হতে সম্পূর্ণ পৃথক সত্তা সম্পন্ন নয়, বরং এটা জাতীয় রাজনীতির সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত।
৪. জাতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের পাঠ : স্থানীয় রাজনীতির গুরুত্ব অত্যন্ত ব্যাপক। স্থানীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ফলেই সাধারণ নাগরিকগণ জাতীয় জীবনের বৃহত্তর রাজনীতিতে অংশগ্রহণের পাঠ শিক্ষা করতে পারে।
৫. যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টি : নেতৃত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্থানীয় রাজনীতিই স্থানীয় নেতৃত্বের বিকাশে ভূমিকা পালন করে। স্থানীয় নেতৃত্বই ভবিষ্যতে জাতীয় নেতৃত্বের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে। এক্ষেত্রে স্থানীয় রাজনীতির ভূমিকাই মুখ্য। স্থানীয় রাজনীতিই দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টিতে যথার্থ ভূমিকা পালন করে।
৬ আর্থসামাজিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন : স্থানীয় আর্থসামাজিক অবকাঠামোগত উন্নয়নকে কেন্দ্র করেই স্থানীয় রাজনীতি আবর্তিত হয়। কারণ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ যারাই থাকুক; তারা রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য স্থানীয় আর্থসামাজিক অবকাঠামোর উন্নয়নের দিকে জোর দেয়। তাই বলা যায়, স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতি স্থানীয় পর্যায়ের আর্থসামাজিক অবকাঠামোর সাথে জড়িত।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, স্থানীয় জনগণের রাজনৈতিক চিন্তাচেতনার প্রতিফলন হচ্ছে স্থানীয় রাজনীতি । স্থানীয় রাজনীতিতে স্থানীয় বিষয়াদিই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়।