সালে বঙ্গবন্ধুর বিশেষ ক্ষমতা আইন সম্পর্কে আলোচনা কর।

অথবা, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বলতে কী বুঝ?
অথবা, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয় কেন?
উত্তর৷ ভূমিকা :
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ একটি কুখ্যাত আইন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হলে খন্দকার মোশতাক আহমেদ ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন। নিচে এটি বর্ণনা করা হলো :
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সামরিক বাহিনীর কিছু সংখ্যক বিপথগামী সদস্যের হাতে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হলে মোশতাক আহমেদ নিজেকে দেশের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। তিনি মোট ৮৩ দিন এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তার শাসনামল নানা দিক দিয়ে ছিল কুখ্যাত। বিভিন্ন ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে তার সময়ে দেশে এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অনেকগুলো হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। অনেকের মতে জাতীয় চার নেতা হত্যার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। সামরিক আইনের ছত্রছায়ায় তিনি ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে
থাকেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকারী সামরিক অফিসারদের চাপের মুখে ১৯৭৫ সালের ৩১ আগস্ট জারিকৃত এক অধ্যাদেশ বলে খন্দকার মোশতাক রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। খন্দকার মোশতাক আহমেদ বঙ্গবন্ধু ও চার নেতার হত্যাকারীদের বিচার থেকে অব্যাহতি এবং ভবিষ্যতে বিচারের হাত থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য তিনি ২৬ সেপ্টেম্বর কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন। এ অধ্যাদেশ জারি করে মোশতাক শুধু তাদের বিচার থেকে অব্যাহতিই প্রদান করেননি পাশাপাশি হত্যাকারীদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, যারা ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও অন্যদের হত্যা করে সেই ঘাতকদের ভবিষ্যৎ বিচারের হাত থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য খন্দকার মোশতাক মানব সভ্যতার কলঙ্ক কুখ্যাত এই অধ্যাদেশ জারি করেন। এ অধ্যাদেশ এদেশের মানুষকে হতবাক ও বিক্ষুব্ধ করে তোলে। সেনাবাহিনীতেও এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ফলে অচিরেই মোশতাকের পতন ঘটে।