অথবা, সামাজিক নিয়ন্ত্রণের স্বরূপ বর্ণনা কর।
অথবা, সামাজিক নিয়ন্ত্রণের স্বরূপ ও প্রকৃতি সম্পর্কে কী জান? সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : সমাজে প্রচলিত যাবতীয় সামাজিক ও ধর্মীয় বিধি ভঙ্গ করাই হলো বিচ্যুতি। পৃথিবীর প্রত্যেক সমাজব্যবস্থার কিছু মানুষ এ বিচ্যুতিমূলক আচরণ করে। তবে বিচ্যুতিমূলক আচরণের কতিপয় ধরন বা প্রকৃতি লক্ষ্য করা যায়।
সামাজিক বিচ্যুতির প্রকৃতি : নিম্নে সামাজিক বিচ্যুতির প্রকৃতি আলোচনা করা হলো :
১. কলঙ্ক চিহ্ন, নিজস্ব ভাবমূর্তি ও বিচ্যুতি : বিভিন্ন প্রকার নিন্দা ও অপবাদ হতে Deviance ঘটতে পারে। সামাজিক অপবাদ ও অবহেলা ব্যক্তিকে বিচ্যুত এমনকি মারাত্মক অপরাধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। আবার সামাজিক অপরাধ ও কলঙ্কসূচক বাণী দ্বারা প্রবাহিত হয়ে ব্যক্তি নিজ সম্পর্কে খারাপ ধারণা করে ও আত্মহননের পথ বেছে নেয়। ফলে বিচ্যুতি ঘটে ।
২. বিচ্যুতিমূলক অপসংস্কৃতি : ব্যক্তি বা দল নিজেদের মত করে ভিন্ন একটি সাংস্কৃতিক আচরণ গড়ে তোলে। নিজেদের খারাপ ধারণার সাথে সমপর্যায়ের লোক খুঁজে পায় এবং তাদের সংস্পর্শে এসে তাদের মত আচরণ করতে থাকে। আর এভাবে তাদের এ ভিন্নধর্মী Subculture বিচ্যুতি ঘটায়, যা বিচ্যুতির একটি প্রকৃতি বা ধরন।
৩. বিভিন্নধর্মী সংগঠন : সাদারল্যান্ড এর মতে, Differential Association এর সাথে যুক্ত হয়ে ব্যক্তি বিচ্যুতিমূলক আচরণ করে। যেমন- চাকরিজীবী তাদের চাকরির ক্ষেত্রে যখন অন্যদেরকে অসৎ উপায় অবলম্বন করে অর্থ আয় করতে দেখে তখন নিজেও তাদের সংস্পর্শে এসে সে অবৈধ উপায় বেছে নেয়। ফলে এমনিভাবে Differential Association এর ফলে Deviance সৃষ্টি হয়।
৪. অবৈধতা : সামাজিক Expectation এর অভাব বা দরিদ্রতা থেকে বিচ্যুতি ঘটতে পারে। Illigitimacy Means এ যুবক বিভিন্ন Gang, Group ও Underworld এর সংস্পর্শে এসে তাদের মত করে নিজেকে গড়ে তোলে এবং আইনকানুন ভঙ্গ করে অসামাজিক কার্যকলাপ, যেমন- চুরি, ডাকাতি ও অন্যায় আচরণে লিপ্ত হয়। আর এসব অসৎ উপায় অবলম্বনের ফলে Deviance ঘটে, যা পরবর্তীতে মারাত্মক অপরাধের সৃষ্টি করে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সামাজিক বিচ্যুতির প্রকৃতি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের। মূলত সামাজিক বিচ্যুতি থেকে অপরাধের সৃষ্টি হয়। তাই কোন দেশের উন্নয়ন ঘটাতে হলে এসব সামাজিক বিচ্যুতি নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।