সামাজিক জরিপের উপাত্ত সংগ্রহের উৎসসমূহ কী কী?

অথবা, কী কী উৎস হতে সামাজিক জরিপে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়?
অথবা, সামাজিক জরিপের উপাত্ত কোন কোন উৎস থেকে গৃহিত হয়েছে?
অথবা, সামাজিক জরিপের উপাত্ত কোন কোন ক্ষেত্র থেকে সংগ্রহ করা যায়।
উত্তর ভূমিকা :
সমাজ গবেষণা পদ্ধতি বা কৌশল হিসেবে সমাজিক জরিপ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংগ্রহ করা, কোন তত্ত্ব যাচাই করা, কোন বিষয়ের সত্যাসত্য নিরূপণ করা, কোন বিষয়ের ব্যাপকতা পরিমাপ করা ইত্যাদির ক্ষেত্রে একটি উত্তম কৌশল। সামাজিক জরিপে কোন একটি বিষয়ের অন্তর্গত সমগ্রক সম্পর্কে একটি সামাজিক চিত্র পাওয়ার চেষ্টা করা হয়। সামাজিক যে জরিপে যে কয়টি পদ্ধতি রয়েছে সাক্ষাৎকার পদ্ধতি এবং পর্যবেক্ষণ কৌশল এগুলোর মধ্যে অন্যতম। সামাজিক জরিপে উপাত্ত সংগ্রহের

উৎসসমূহ : সামাজিক জরিপে উপাত্ত সংগ্রহের উৎস বহুবিধ। তবে এর প্রধান একটি লক্ষ্য হচ্ছে কোন বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যসংগ্রর করা। এজন্য অনেকে সামাজিক জরিপকে পদ্ধতি না বলে তথ্যসংগ্রহের কৌশল বলে থাকেন বস্তুত কোন একটি বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেতে হলে যেমন কোন একটি অঞ্চলের লোকদের জনমিতিমূলক বৈশিষ্ট্য, জমির পরিমাণ, জমির ব্যবহার, মাথাপিছু আয়, উৎপাদন, বিনিয়োগ অথবা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য পেতে হলে সামাজিক জরিপের প্রয়োজন। তাই সামাজিক জরিপ আজকাল অনেক নিত্যনতুন বিষয়েও প্রয়োগ হচ্ছে। সর্বশেষ কৌশল অনুযায়ী যেমন কৃষকদের চাহিদা জরিপ, ঋণের চাহিদা জরিপ, কৃষকদের অর্থ পরিশোধের ক্ষমতা দারিদ্র্য বা ভাসমান জনগোষ্ঠীর উপর জরিপ, বাজার জরিপ, সম্ভাব্য উপকারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সম্পর্কে জরিপূ উপকারপ্রাপ্ত লোকদের সেবার মূল্য পরিশোধের ক্ষমতা, রোগ বালাই সম্পর্কিত জরিপ, জনমত সম্পর্কিত জরিপ, রাস্তা ব্যবহারকারীর উপর জরিপ, পরিবহন খাত সম্পর্কিত জরিপসহ অসংখ্য নিত্যনতুন বিষয়ে জরিপ চালান করা হচ্ছে। জরিপ
পদ্ধতিতে যেসব উৎস হতে তথ্য বা উপাত্ত সংগ্রহ করা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পর্যবেক্ষণ, ডাকযোগ প্রেরিত প্রশ্নমালা এবং ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার প্রভৃতি। কোন কোন জরিপে প্রামাণ্য তথ্যের উপযোগিতা থাকলেও পরিসংখ্যানগত ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে তা সমস্যার সৃষ্টি করে বলে সামাজবিজ্ঞানের জরিপসমূহে এ কৌশলটিকে প্রায়শ পরিহার করা হয়। আবার জরিপ পদ্ধতিতে সামগ্রিকভাবে অনুসন্ধানের একটি কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে এবং এক্ষেত্রে উপাত্ত সংগ্রহের জন্য এটি নিম্নোক্ত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করে। যথা :
১. আধেয় বিষয়ের উপর প্রকাশিত পরিসংখ্যান,
২. নমুনায়ন,
৩. প্রশ্নমালার মাধ্যমে অনুসন্ধানকৃত তথ্য,
৪. সাক্ষাৎকার নির্ভর কার্যক্রম,
৫. পর্যবেক্ষণ নির্ভর কার্যক্রম,
৬. রেকর্ডিং এবং বিভিন্ন মাধ্যমসমূহ,
৭. দলীয় আচরণ বিশ্লেষণ এবং
৮. প্রামাণ্য নথিপত্রের আধেয় বিশ্লেষণ ইত্যাদি।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সামাজিক জরিপে উপাত্ত সংগ্রহের অনেকগুলো উৎস রয়েছে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন উৎস থেকে উপাত্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার ও পর্যবেক্ষণ কৌশল দুটি কৌশল । যদিও বাংলাদেশে এ দুটি পদ্ধতির মাধ্যমেই একজন গবেষক বেশি পরিমাণে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য সংগ্রহ করতে গুরুত্বপূর্ণ পারে। তবে বাংলাদেশে আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণে এ দুটি পদ্ধতির কিছু কিছু সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হয়।