সমাজকাঠামোয়র মার্কসীয় ব্যাখ্যা

সমাজকাঠামোয় মার্কসীয় ব্যাখ্যা:

ভিত্তি ও উপরিকাঠামো মার্কসবাদ সমাজকে বিশ্লেষণ করার জন্য একটি ভিত্তি-উপরিকাঠামো মডেল ব্যবহার করে। এই মডেল অনুসারে, সমাজের দুটি প্রধান স্তর রয়েছে:

ভিত্তি:

  • উৎপাদনশক্তি: মানুষ যেভাবে পণ্য তৈরি করে এবং জীবিকা নির্বাহ করে তার উপায়। এর মধ্যে রয়েছে সরঞ্জাম, প্রযুক্তি, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং শ্রম।
  • উৎপাদন সম্পর্ক: মানুষ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় একে অপরের সাথে যেভাবে সম্পর্কিত তা। এর মধ্যে রয়েছে মালিকানা, নিয়ন্ত্রণ এবং শ্রম বিভাগ।

উপরিকাঠামো:

  • রাজনৈতিক ব্যবস্থা: যারা সমাজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্ষমতা ধারণ করে।
  • আইন: নিয়মকানুন যা সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ধর্ম: মানুষের বিশ্বাস ও মূল্যবোধ।
  • পরিবার: সমাজের মৌলিক ইউনিট।
  • শিক্ষা: মানুষকে যে জ্ঞান ও দক্ষতা দেওয়া হয়।
  • সংস্কৃতি: মানুষের জীবনধারা, রীতিনীতি ও ঐতিহ্য।

মার্কসবাদীরা বিশ্বাস করেন যে ভিত্তি সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি উপরিকাঠামোকে নির্ধারণ করে। এর অর্থ হল যে, উৎপাদনশক্তি এবং উৎপাদন সম্পর্ক পরিবর্তন হলে, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, আইন, ধর্ম, পরিবার, শিক্ষা এবং সংস্কৃতিও পরিবর্তিত হবে।

উদাহরণ:

  • শিল্প বিপ্লব: শিল্প বিপ্লবের সময়, উৎপাদনশক্তি যন্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। এর ফলে কারখানা ব্যবস্থার উত্থান ঘটে এবং শ্রমিক শ্রেণীর জন্ম হয়। এই পরিবর্তনগুলি রাজনৈতিক ব্যবস্থা, আইন, ধর্ম, পরিবার, শিক্ষা এবং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন এনেছিল।
  • তথ্য বিপ্লব: তথ্য বিপ্লবের সময়, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের উত্থানের সাথে সাথে উৎপাদনশক্তি আবারও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। এর ফলে পরিষেবা অর্থনীতির উত্থান ঘটে এবং জ্ঞান শ্রমিক শ্রেণীর জন্ম হয়। এই পরিবর্তনগুলি রাজনৈতিক ব্যবস্থা, আইন, ধর্ম, পরিবার, শিক্ষা এবং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনছে।

সমালোচনা:

মার্কসীয় ভিত্তি-উপরিকাঠামো মডেলের কিছু সমালোচনা রয়েছে। কিছু লোক মনে করেন যে এটি খুবই সরলীকৃত এবং সমাজের জটিলতাকে পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না। অন্যরা মনে করেন যে এটি অতিরিক্তভাবে অর্থনৈতিক কারণগুলিতে ফোকাস করে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলি, যেমন