উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আবুল কালাম শামসুদ্দীন বিরচিত ‘পথ জানা নাই’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে। উক্তিটি গহুরালির।
প্রসঙ্গ : গহুরালি কথাটা বলেছে তার স্ত্রী হাজেরাকে। নতুন সড়কের জন্য দুই কুড়া জমি ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করতে গিয়ে সে উল্লিখিত উক্তিটি করে।
বিশ্লেষণ : মাউলতলা গ্রামের দরিদ্র কৃষক গহুরালি। বাইরে থেকে ঘুরে আসা জোনাবালি হাওলাদার গ্রামের সাথে শহরের যোগাযোগ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা প্রশ্নপূর্বক একটা নতুন সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব দেয়। গ্রামবাসীরা তার কথায় চমৎকৃত হয়ে নতুন জীবনের আশায় বুক বাঁধে। সড়কের জন্য প্রয়োজন জমির। গহুরালির পাঁচ কুড়া জমির দুই কুড়াই পড়ে সড়কের উপর। প্রথমত দ্বিধা করলেও জোনাবালির যুক্তির কাছে হার মেনে সে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। স্ত্রী হাজেরার কাছে এই সিদ্ধান্তের কথা জানালে তার মন সায় দেয় না। গহুরালি তখন জোনাবালির কাছে শোনা কথাগুলোই ভারিক্কী চালে হাজেরাকে শুনিয়ে দেয়। হাজেরা সড়কের ব্যাপারে মৌলবি সাহেবের নেতিবাচক কথা উল্লেখ করে স্বামীকে নিরুৎসাহিত করতে গেলে গহুরালি যুক্তির পর যুক্তি দিতে থাকে। সে বলে, সকলের মঙ্গলের জন্য সকলকেই কিছু কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, নতুন কিছু করতে গেলে কিছু কিছু লোক বাধা দেয়ই । হাজেরা এরপরও নিজেদের দারিদ্র্যের কথা পেড়ে স্বামীকে সতর্ক করতে চায়। গহুরালি তখন মেয়ে মানুষের বুদ্ধির সমালোচনা করে উল্লিখিত উক্তিটি করে। তার মতে, সকলের মঙ্গলের মানেই তো তাদেরও মঙ্গল। সুতরাং সকলের মতের সাথে একাত্ম হয়ে ত্যাগ স্বীকার করাই শ্রেয়।
মন্তব্য : সকলের ভালোই ব্যক্তিবিশেষের ভালো। এক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষণ করা ঠিক নয়।