অথবা, সংস্কৃতির বস্তুগত বিষয়গুলো কী?
অথবা, চোখে দেখা যায় এমন সাংস্কৃতিক উপাদানগুলো কী?
অথবা, বস্তুগত সাংস্কৃতিক উপাদান কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা : পৃথিবীতে প্রাপ্ত সব বস্তুই সংস্কৃতির উপাদান নয়। মূলত বিভিন্ন বস্তুগত ও অবস্তুগত উপাদানসমূহের সংমিশ্রণে মানব সংস্কৃতির সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে বস্তুগত সাংস্কৃতিক উপাদানই মূলত বাস্তবসম্মত এবং
দৃশ্যমান হিসেবে বিবেচিত।
বস্তুগত বা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য উপাদান : সংস্কৃতি যখন বাস্তব রূপ লাভ করে কিংবা বাস্তব রূপ ধারণ করে, তখন তাকে সংস্কৃতির বাস্তব বা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য উপাদান বলা হয়। সংস্কৃতির বাস্তব উপাদানসমূহের মধ্য দিয়ে মানুষের মানসিক ধারণা ও মূল্যবোধের প্রকাশ ঘটে। সংস্কৃতির বাস্তব উপাদানসমূহ অপ্রতীকী উপাদান হিসেবে অভিহিত। সামাজিক মানুষ তার বিচারবুদ্ধি ও জ্ঞান এবং কর্মকুশলতাকে খাটিয়ে বিবিধ বস্তু উৎপাদন করে। এসব বস্তুর মধ্যে আবার কতকগুলোর উপর পৃথক দৃষ্টিভঙ্গির পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ মূল্যবান বা আদর্শ আরোপিত হয়। এ ধরনের আদর্শমণ্ডিত বা মূল্যমানযুক্ত বাহ্য বস্তু সংস্কৃতির দ্যোতক বলে অভিহিত হয়। যেমন- ঘরবাড়ি, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা, অফিস, আদালত ইত্যাদি ইমারতসমূহ সংস্কৃতির বাস্তব উপাদানের অন্তর্ভুক্ত। মানুষ তার নিজের কর্মদক্ষতার দ্বারা এসব তৈরি করেছে। এসব ঘরবাড়ি তথা ইমারত কেবল চুন, সুরকি, সিমেন্ট, বালি বা ইট, পাথরের সমাবেশ নয়, বরং পৃথক দৃষ্টিভঙ্গি বা মূল্যবোধ অনুযায়ী মানুষ এসবের উপর আদর্শ বা মূল্যমান আরোপ করে থাকে। এসব বাহ্যবস্তু খুবই তাৎপর্যপূর্ণ, যা সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। এগুলো হলো সংস্কৃতির বাহিরের অবস্থা ।।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, মানুষ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীব। সংস্কৃতি মানুষের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য । আর এ সংস্কৃতি মূলত বস্তুগত বা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য উপাদানের দ্বারাই প্রকাশ পায়। তবে বস্তুগত ও অবস্তুগত উভয়প্রকার উপাদানই সংস্কৃতির জন্য অত্যাবশ্যক উপাদান।