শূন্য ছিল নিতল দীঘির শীতল কালো জল, কেন তুমি ফুটলে সেথা ব্যথার নীলোৎপল?” কবি কেন এমন বলেছেন?

উত্তর : আলোচ্য পঙক্তিদ্বয় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিরচিত ‘ছায়ানট’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘চৈতী হাওয়া’ নামক
কবিতায় প্রিয়ার বিরহে ব্যথিত হয়ে শোকাহত হৃদয়ে একথা ব্যক্ত করেছেন। কবির জীবন ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু কোন এক চৈতী হাওয়া তার জীবন এলোমেলো করেছিল। তাঁর জীবনে প্রেমাকাঙ্ক্ষা ও তাঁর প্রিয়ার সাথে একাকার হওয়ার বাসনা জাগ্রত হলো। নিথর দীঘির জলে চৈতী হাওয়া যেমন ঢেউ তোলে তেমনি কবির প্রেমকাতুর হৃদয়কে আলোড়িত করে। জীবনে প্রথম প্রেমের শিহরণে প্রিয়ার জন্য পাগলপ্রায় হলেন কবি। কিন্তু সেই প্রেম দীর্ঘস্থায়ী হলো না। কবি হৃদয়কে বিদীর্ণ করে দিয়ে শূন্যে সে প্রেম হারিয়ে গেল। দীঘির জলে প্রস্ফুটিত হয় ফুল কিন্তু দেবতাকে অর্পণ করার জন্য দীঘির বুক থেকে প্রস্ফুটিত ফুল ছিন্ন করা হয়। তেমনি করে কবির প্রিয়া কবি হৃদয়কে বিদীর্ণ করে দিয়ে হারিয়ে গেল। এ প্রিয়াহারা ব্যথায় কবি নীল হয়ে গেছেন। কবিপ্ৰিয়া কবি হৃদয়ে পদ্ম হয়ে ফুটেছিল, কিন্তু সে আজ নেই। স্বপন অভিসারিণী প্রিয়াকে প্রতিমুহূর্তে কবি খুঁজেছেন। কিন্তু সন্ধান মেলে না। কবি তাঁর প্রিয়াকে অভিযোগ করেছেন, তাঁর জীবন দীঘির কালো জলের মতো শান্ত ও স্থির ছিল কিন্তু তাঁর প্রিয়ার কি কবি হৃদয়ে আঘাত করা উচিত হয়েছে? এ উত্তরের প্রত্যাশায় প্রহর গুণছেন তিনি। পরিশেষে একথা বলা যায় যে, রোমান্টিক কবি তাঁর প্রেমভাবনা ও বিরহকাতর হৃদয়কে দীঘির উত্তাল অবস্থার সাথে তুলনা করেছেন।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%9a%e0%a7%88%e0%a6%a4%e0%a7%80-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%80-%e0%a6%a8%e0%a6%9c/