উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ বাংলাদেশের শতকরা ২৪ ভাগ মানুষ শহরে বাস করে। জীবিকার তাগিদে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ শহরের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে বেড়ে যাচ্ছে শহরে মানুষের সংখ্যা। সৃষ্টি হচ্ছে নিত্য নতুন সমস্যা। সীমিত সম্পদের দ্বারা পূরণ করা যাচ্ছে না নিত্য নতুন চাহিদা। স্বল্পমজুরি ও মধ্যবিত্ত আয়ের পরিবারগুলো অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দুর্বল হওয়াতে পড়ছে বিপাকে। শহর সমাজসেবা এক্ষেত্রে এধরনের পরিবারের সদস্যদের মাঝে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণদানের ব্যবস্থা করে জীবনমানোন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ রাখছে। তাই বাংলাদেশ শহর সমাজসেবা কর্মসূচির গুরুত্ব বেড়েই চলেছে।
→ শহর সমাজ সেবা ঃ শহর সমাজ সেবা বলতে বুঝায় শহরের জনসমষ্টির স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তাদের নিজস্ব সমস্যা সমাধান ও অর্থনৈতিক উন্নতি ত্বরান্বিত করতে সরকারের সমাজকর্মীদের সহায়তা করা ও নতুন সুযোগ সুবিধার সৃষ্টি করে জীবন মানোন্নয়নের সম্মিলিত কর্মসূচি।
সাধারণ অর্থে ঃ সাধারণ অর্থে শহর সমাজসেবা বলতে শহরের নিম্নবিত্ত শ্রেণির জন্য সমাজকল্যাণমূলক এক সমন্বিত সেবা কর্মসূচি । এভাবেই এটি শহরের বাসিন্দাদের নতুনভাবে বেঁচে থাকার প্রেরণা দান করে থাকে। এ
→ প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
জাতিসংঘের তৎকালীন UCD প্রকল্পের উপদেষ্টা ড. মিলটন এম. রোজনার বলেছেন, “সহজ কথায় শহর সমাজসেবা বলতে বুঝায় শহর জনসমষ্টির দ্বারা ও সরকারের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী ও সম্পদ ও সেবা দ্বারা প্রয়োজনীয় সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সুযোগ ও সেবা কার্যক্রম চালু করার নামই শহর সমাজ সেবা।” অধ্যাপক গফুর ও মান্নান মোল্লার মতে, “শহর সমাজসেবা বলতে শহর এলাকার সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন এক উন্নয়নমূলক পদক্ষেপকে বুঝায়, যেখানে সরকার ও জনগণের যৌথ উদ্যোগে জনগণের সমস্যা সমাধান, চাহিদা পূরণ ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।”
শহর সমাজ সেবার মূলকথা : শহর সমাজসেবা শহরের যাবতীয় সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বেশ কাজ করে থাকে। শহর সমাজসেবা হলো শহর এলাকায় পরিচালিত একটি উন্নয়নমূলক প্রচেষ্টা যাতে অভাবগ্রস্ত শ্রেণির কল্যাণকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে বিভিন্ন বৃত্তিমূলক ও কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া সচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদির মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের শহরগুলোর সার্বিক উন্নয়নে এর ভূমিকা সত্যিই অনস্বীকার্য শহর সমাজসেবা শহরে মানুষের সব সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, শহর সমাজসেবা একটি সমন্বিত সমাজ কল্যাণমূলক সেবা কর্মসূচি। সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে ও জনগণের প্রত্যাশা অংশগ্রহণের মাধ্যমে শহর সমাজসেবা কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। শহর সমাজসেবা স্বল্প আয়ের ও নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি
ব্যাপকভাবে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা চালানো হয় । বেকার যুবক যুবতী, বৃদ্ধ দুর্বল, ভবঘুরে ও অসহায় শহরে মানুষদের জীবনমানোন্নয়নের এ ধরনের কর্মসূচি সত্যিই প্রশংসার দাবিদার ।