লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী? সংক্ষেপে মূল্যায়ন কর।

অথবা, লাহোর প্রস্তাবের প্রকৃতি বিশ্লেষণ কর।
অথবা, লাহোর প্রস্তাবের বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
লাহোর প্রস্তাবের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো মুসলমানদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও স্বায়ত্তশাসন। ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ গঠনের মাধ্যমে এ প্রস্তাবের পটভূমি রচিত হয়। ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ফজলুল হকের প্রস্তাবটি কতকগুলো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর।
লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য : নিচে লাহোর প্রস্তাবের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো :
১. ভৌগোলিক সীমানা নির্ধারণ : লাহোর প্রস্তাবে বলা হয় যে, ভৌগোলিক এলাকা সংলগ্ন প্রদেশগুলোর সীমানা নির্ধারণ করে এগুলোকে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের আওতায় আনতে হবে এবং একাধিক অঞ্চল গঠন করতে হবে যাতে উত্তর-পশ্চিম ও পূর্ব ভারতের এলাকাগুলো নিয়ে আলাদা মুসলিম রাষ্ট্র গঠন করা যায় এবং এ অঞ্চলের রাজ্যগুলো যেন স্বায়ত্তশাসন পায় ।
২. ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংরক্ষণ : লাহোর প্রস্তাবে বলা হয় যে, সকল অঙ্গরাজ্যে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, শাসনতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কযুক্ত অধিকারসমূহ সংরক্ষণের নির্দিষ্ট ব্যবস্থাসমূহের উল্লেখ শাসনতন্ত্রে থাকতে হবে।
৩. মুসলমানদের স্বার্থরক্ষা : ভারতের যেসব অংশে মুসলমানরা সংখ্যালঘু তাদের এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অধিকারসমূহের সংরক্ষণের কথা শাসনতন্ত্রে উল্লেখ থাকতে হবে। এছাড়া লাহোর প্রস্তাবের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলো হলো :
১. ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে পাশাপাশি অবস্থিত এলাকাসমূহকে পৃথক অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে।
২. উত্তর-পশ্চিম ও পূর্ব ভারতের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে মুসলমানদের জন্য আলাদা রাজ্য গঠন করতে হবে। ছাতি, এ রাজ্যগুলো স্বাধীন ও সার্বভৌম হবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করলে এটা আমাদের নিকট স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এ প্রস্তাব ছিল মূলত মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণের দলিল। এ প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করেই ১৯৪৭ সালে স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়।