যে যৌবন যযাতি নিজের পুত্রের কাছে ভিক্ষা করেছিলেন, সংস্কৃত কবিরা সে যৌবনেরই রূপ, গুণ বর্ণনা করেছেন।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু সুসাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী বিরচিত ‘যৌবনে দাও রাজটিকা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে যৌবন সম্পর্কে সংস্কৃত ভাষার কবি-সাহিত্যিকগণের ধারণা প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক উল্লিখিত মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষণ : যৌবনকাল মানুষের শ্রেষ্ঠ সময়। এ সময়ে মানুষের দেহ প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর থাকে। সংস্কৃত সাহিত্যে মানুষের এ দৈহিক যৌবনের রূপগুণ বর্ণনা করা হয়েছে। সংস্কৃত সাহিত্য ভারতবর্ষের প্রাচীন সাহিত্য। দীর্ঘদিন পর্যন্ত এ সাহিত্য পৃথিবীর এ অঞ্চলের মানুষের মনের উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল। এ সাহিত্যে যৌবনকে দেখানো হয়েছে ভোগের সামগ্রী হিসেবে। মানুষও তা পড়ে যৌবনে ভোগলালসায় মত্ত ছিল। ভোগ বাসনা চরিতার্থ করা ছাড়া যৌবনের অন্য কোন ব্যবহার সংস্কৃত সাহিত্যে দেখা যায় না। পুরাণে বর্ণিত রাজা যযাতি যখন বার্ধক্যে উপনীত হন তখন তিনি যৌবন ফিরে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন। আপন পুত্রদের কাছে তিনি যৌবন ভিক্ষা চেয়েছিলেন। পিতৃভক্ত পুত্র পিতার জরা আপন দেহে ধারণ করে নিজের যৌবন পিতাকে উৎসর্গ করেছিলেন। ভোগবাদী যযাতি সে যৌবন গ্রহণ করে পুনরায় ভোগলালসায় মত্ত হয়ে উঠেছিলেন। ভোগের নিমিত্ত যে যৌবন- যযাতি আপন পুত্রের কাছে যা ভিক্ষা চেয়ে নিয়েছিলেন সংস্কৃত কাব্যে সে যৌবনেরই গুণকীর্তন করা হয়েছে।
মন্তব্য : ভোগ লালসার চোরাবালিতে আটকা পড়ে সংস্কৃত কবিরা দৈহিক যৌবনের পূজারী হয়ে পড়েছিলেন। মানসিক যৌবন তাই তাদের কাছে ছিল একেবারেই অজানা ও অচেনা।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%af%e0%a7%8c%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%93-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%9f%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be-%e0%a6%aa%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%aa/