উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ যুব কল্যাণ যুবক শ্রেণির সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করে থাকে। সমাজে যুব কল্যাণ নিশ্চিত হলে দ্রুত উন্নয়ন ঘটাতে থাকে । এটি মূলত যুবকদের (১৫-৩০ বছর বয়স্ক) বিভিন্ন প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণ, সমস্যা সমাধান এবং শিক্ষাদান তৎপরতার সাথে জড়িত, যুবকদের কর্মোদ্দীপিত করতে পারলে উন্নয়নের মাত্রা প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যায়। যে কোনো দেশের জন্য যুবসমাজ দক্ষ জনবল হিসেবে গণ্য হয়।. অতএব, যুবকল্যাণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক।
→ যুবকল্যাণ ঃ যুবকদের সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা মুক্ত করে ও চাহিদা পূরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যুবকদের দৈহিক, মানসিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক তথা সার্বিক কল্যাণকে বুঝায়। আর এ লক্ষ্যে যুবকদের বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও কারিগরী সহায়তা প্রদান করা হয়। যুবকল্যাণের মাধ্যমে তাদের চাহিদা পূরণ হয়, সামগ্রিক বিকাশ
ও উন্নয়ন সাধিত হয়, দেহ-মন ও জীবনীশক্তির কার্যকারিতা আবিষ্কার হয়।
সাধারণ অর্থে : সাধারণ অর্থে যুবকল্যাণ বলতে যুবকদের কল্যাণের নিমিত্তে বস্তবসম্মত কর্মসূচির সমষ্টিকে বুঝায়।
শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও নিরক্ষর যুবকদের যুবকল্যাণের আওতায় আনতে পারলেই সমাজে গঠনমূলক উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যেতে পারে।
শব্দগত অর্থে : যুবকল্যাণ শব্দগত অর্থে ইংরেজিতে Youth welfare শব্দটিকে নির্দেশ করে থাকে।
■ প্রমাণ্য সংজ্ঞা:
→ যুবকল্যাণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞায়ন প্রদান করা হলো- মনীষী Pittman এর ভাষ্যমতে, “যুব উন্নয়ন কার্যক্রম হচ্ছে এমন চলমান প্রক্রিয়া যাতে সকল যুবক তাদের মৌল ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রয়োজন পূরণেও কাজের দক্ষতা ও যোগ্যতা অর্জনে এবং দৈনন্দিন জীবনে অবদান রাখার লক্ষ্যে
নিয়োজিত থাকে।”
ড. আলী সরকার বলেন, “যুবকল্যাণ হচ্ছে যুবকদের জন্য গৃহীত সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী ঐসব যুবসেবা তাদের অবসর সময় ও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধাকে কাজে লাগায়। তাদের শরীর, মন ও আত্মার আবিষ্কার ও বিকাশ সাধন এবং এভাবে তাদেরকে সমাজের পরিপক্ক, সৃজনশীল ও দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে সামঞ্জস্যশীল করার লক্ষ্যে গৃহ
সুবিধা, আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ও কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।” ও ভারতীয় সমাজকর্ম বিশ্বকোষ এর সংজ্ঞা মতে, “যুব কল্যাণ প্রথাগত শিক্ষার পরিবর্তে নৈতিক, আর্থিক, শারীরিক বিষয়াদি আলোচনা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে যুবকদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধনকে নির্দেশ করে থাকে।
→ মোট কথা ঃ বুকল্যাণের মাধ্যমে সৃজনশীল ও দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে সমাজের প্রতিটি যুবককে শারীরিক,
মানসিকভাবে প্রস্তুত করা হয়। যুবকরা অফুরন্ত সম্ভাবনার অধিকারী। তাদের উদ্যমশীল ও কর্মতৎপরতার বাড়াতে যুবকল্যাণের কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য হয়। যুবকল্যাণের মাধ্যমে জাতির ভবিষ্যৎ কল্যাণের ধারা অব্যাহত রাখে। এজন্য যুবকল্যাণই পারে দক্ষ জনশক্তি গড়তে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, যুবকল্যাণ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে গৃহীত যুব সেবার সমষ্টি যাতে যুবকদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার সূত্রপাত ঘটান। প্রতিটি যুবককে উদ্যমী ও কর্মমুখর করে গড়ে তোলার বেশ জোরালো প্রচেষ্টা থাকে যুবকল্যাণে। তাই বাংলাদেশের প্রতিটি সমাজের দ্রুত উন্নয়নের স্রোতধারায়
অবগাহনে যুবকল্যাণ কার্যক্রমগুলোর যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সরকারকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।