অথবা, মৌলিক গবেষণার সংজ্ঞা দাও।
অথবা, মৌলিক গবেষণা কী?
অথবা, মৌলিক গবেষণা কাকে বলে?
অথবা, মৌলিক গবেষণার সংজ্ঞা লিখ।
উত্তরঃ ভূমিকা : মৌলিক গবেষণা প্রয়োগের নয়। এগুলোতে উপাত্তের ব্যবহার হয় না। মৌলিক গবেষণা মূলত দর্শনের কোন শাখায় মৌল বিষয়ের উপর পরিচালিত। মৌলিক গবেষণাগুলো দার্শনিক (Philosophic) গবেষণা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
মৌলিক গবেষণা : পৃথিবী ও তার বিভিন্ন ঘটনাবলি সম্পর্কে শুধু জ্ঞান অর্জনের জন্য যে গবেষণা কর্ম পরিচালনা করা হয়, তাকে মৌলিক গবেষণা বলে। জ্ঞান আহরণই মৌলিক গবেষণার প্রথম ও প্রধান প্রেরণা। মৌলিক গবেষণা তত্ত্ব ও প্রকল্পের বিকাশ এবং যাচাই-বাছাই করে থাকে- যা অনুসন্ধানকারীর নিকট বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে উৎসাহব্যাঞ্জক এবং যার ভবিষ্যৎ সামাজিক কার্যকারিতা থাকলেও বর্তমানের সামাজিক সমস্যার ক্ষেত্রে কোনো কার্যকারিতা থাকে না। একে Pure Research বা Fundamental Researchও বলা হয়ে থাকে।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : মৌলিক গবেষণা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে কে. ডি. বেইলি (KD. Bailey) বলেন, “Pure research involves developing and testing theories and hypothesis that are intellectually interesting to the investigator and might thus have some social application in the future, but no application to social problems in the present time.” অর্থাৎ, বিশুদ্ধ গবেষণা তত্ত্ব ও পূর্বানুমানের উন্নয়ন ও যাচাইয়ের সাথে জড়িত যেগুলো বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে অনুসন্ধানকারীর কাছে চিত্তাকর্ষক এবং যেগুলোর ভবিষ্যৎ সামাজিক আবেদন থাকলেও বর্তমান সময়ের সামাজিক সমস্যায় কোনো আবেদন নেই।
J. W. Pleiffer মৌলিক গবেষণা সম্পর্কে বলেন, “Basic research deals with a theoretical problem in basic discipline.” অর্থাৎ, মৌলিক গবেষণা তাত্ত্বিক সমস্যা থেকে উদ্ভূত ।
ডব্লিউ. এল. নিউম্যান (William Lawrence Neuman) তাঁর Social Research Methods (Qualitative knowledge about the social world. It focuses on refuting or supporting theories that explain how and Quantitative Approaches) শীর্ষক গ্রন্থে উল্লেখ করেন, “Basic research advances fundamental the social world operates, what makes things happen, why social relations are a certain way, and why society changes. Basic research is the source of most new scientific ideas and ways thinking about the world.” অর্থাৎ, মৌলিক গবেষণা সামাজিক বিশ্ব সম্পর্কে মৌল জ্ঞান সম্পর্কে
আলোকপাত করে। সামাজিক বিশ্ব কিভাবে কাজ করে, বস্তু কিভাবে গঠিত হয়, সামাজিক সম্পর্ক কেন সুনির্দিষ্ট দিকে ধাবিত হয় এবং সমাজ কেন পরিবর্তিত হয় ইত্যাদি ব্যাখ্যা প্রদানের মাধ্যমে তত্ত্বকে খণ্ডন অথবা সমর্থন করতে পারে । মৌলিক গবেষণা হচ্ছে বিশ্ব সম্পর্কে চিন্তার দিকদর্শন এবং অধিকাংশ নতুন বৈজ্ঞানিক ধারণার উৎস।
উপসংহার : উপর্যুক্ত সংজ্ঞার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উদ্ভাবন, আবিষ্কার, অজানা জগতে পাড়ি জমানো, যা জানা নেই তা প্রশ্নাতীতভাবে জানার জন্যই মৌলিক গবেষণাকর্ম পরিচালিত হয়। বস্তুত জ্ঞান অর্জনের তাগিদে কোনো একটি বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ থেকে মৌলিক গবেষণার প্রয়াস লক্ষ করা যায়। বাস্তব জীবনে কতটুকু মূল্যায়ন হবে তা বিচার্য ও উদ্দেশ্য থাকে না বলে এ গবেষণাকে দার্শনিক হিসেবেও অনেকে আখ্যায়িত করেন।