ফলিত গবেষণা কাকে বলে

অথবা, মাঠ গবেষণা কাকে বলে?
অথবা, ফলিত গবেষণার সংজ্ঞা দাও।
অথবা, ফলিত গবেষণার সংজ্ঞা লিখ।
অথবা, মাঠ গবেষণার সংজ্ঞা দাও।
অথবা, মাঠ পবেষণা কী?
উত্তর৷ ভূমিকা : গবেষক একটি বাস্তব সমস্যাকে জানতে গিয়ে সমস্যার প্রকৃতি, এর কার্যকারণ সম্পর্ক, প্রভাব ও সময় কাল ইত্যাদি সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের নীতিমালা অনুসরণ করে থাকেন। প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণায় ব্যাপৃত থাকতে হয় বলে অনেকে ফলিত গবেষণাকে মাঠ গবেষণা হিসেবেও আখ্যায়িত করেন।
ফলিত গবেষণা : যে গবেষণা বাস্তব কোনো সমস্যার সমাধান বা কোনো কর্মসূচি প্রণয়ন বা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয় তাকে ফলিত গবেষণা বলে । ফলিত গবেষণাকে প্রায়োগিক গবেষণা বলাটাই শ্রেয় ।
কে. ডি. বেইলি (K. D. Bailey) এর মতে, “Applied research is a research with findings that can be applied to solve social problems of immediate concern.” অর্থাৎ, কোন আসন্ন সামাজিক সমস্যার সমাধানে প্রয়োগ করা যেতে পারে এমন ফলাফল সমৃদ্ধ যে গবেষণা তা হলো ফলিত গবেষণা ।
ম্যাসন ও ব্র্যাম্বল (Mason and Bramble) তাঁদের ‘Understanding and Conducting Research’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, “The major purpose of applied research is to answer practical and useful questions
about policies, programs, projects, procedures or organizations.” অর্থাৎ, ফলিত গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য হলো নীতি, কর্মসূচি প্রকাশ, কার্যপ্রণালি বা সংগঠন সম্পর্কে বাস্তব এবং উপযোগী প্রশ্নের উত্তর দেয়া ।
শুদ্ধ এবং হ্যাট (Goode and Hatt) কলিত গবেষণার ভূমিকা সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, “Applied research can contribute new facts. It can put theory to the test. It may aid in conceptual
clarification. It may integrate previously existing theory.” অর্থাৎ, ফলিত গবেষণা নতুন ঘটনা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাপে, এটি তত্ত্ব গঠনে এবং প্রত্যেকের শ্রেণিবিন্যাসের সাহায্য করে। এটি পুরাতন ধারণাকে পরীক্ষা করতে পারে । উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশসমূহে ফলিত গবেষণার গুরুত্ব অত্যধিক। বিশেষকরে উন্নয়নশীল দেশসমূহে নানামুখী
সমস্যা যেমন- উচ্চ জন্মহার রোধ, দারিদ্র্য বিমোচন, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, কিশোর অপরাধ, মাদকাসক্তি, বাসস্থান সমস্যা,
পরিবেশগত বিপর্যয় ইত্যাদি থেকে উত্তরণের জন্য ফলিত গবেষণার দ্বারস্থ হতে হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত সংজ্ঞার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বাস্তব ক্ষেত্রে মানব কল্যাণের জন্য কলিত গবেষণার প্রত্যক্ষ প্রয়োগ রয়েছে। এটি অর্জিত জ্ঞানকে বাস্তবক্ষেত্রে প্রয়োগ করে মানুষ ও সমাজের কল্যাণে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। বস্তুত কলিত গবেষণার দ্বারা প্রাপ্ত বিস্তর উপাত্ত তাত্ত্বিক সূত্রায়নের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।