মৃত্যুকে সে পেরিয়ে এসেছে আর অলি-গলি দিয়ে ঘুরে মৃত্যুহীনতার উন্মুক্ত সদর রাস্তায় এসে পড়েছে।”- ব্যাখ্যা কর। করা হয়েছে।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বিরচিত ‘নয়নচারা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে মৃত্যুভয়হীন আমুর মৃত্যু সম্পর্কে যে অকুতোভয় ধারণার সৃষ্টি হয়েছে গল্পকার আলোচ্য বাক্যটিতে তাই তুলে ধরেছেন।
বিশ্লেষণ : আমু ময়ূরাক্ষী নদীতীরবর্তী নয়নচারা গ্রামে বাস করতো। সর্বনাশা দুর্ভিক্ষের পীড়নে আমু শহরে এসেছে বাঁচার তাগিদে। এখানে এসে আমু খোলা আকাশের নিচে ফুটপাতে আশ্রয় নিয়েছে। বাঁচার জন্য সে শহরে এসেছে। কিন্তু বাঁচার উপায় সে খুঁজে পায় না। গ্রামে পড়ে থাকলে মৃত্যু ছিল অনিবার্য। সে মৃত্যুকে পেরিয়ে এসেছে সে। এখানে পদে পদে তাকে লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে। শহরের মানুষ কেউ তাকে ভালো চোখে দেখে না। এক ময়রার দোকানের সামনে দাঁড়ানোর অপরাধে দোকানদার তাকে তেড়ে মারতে এসেছিল। পথে নেমে সে ভাবল লোকটা বুঝি অন্ধ। এরপর আমু পথ ধরে হাঁটে আর ভাবে ময়ূরাক্ষী নদীর কথা। এখন সেই নদীর তীরে কুয়াশা নেমেছে। শান্ত নদী। দূরে একটি নৌকায় করতোাল ঝনঝন করছে; আর শ্মশান ঘাটে মৃতদেহ পুড়ছে। মৃত্যু চিন্তা পেয়ে বসে আমুকে। কিন্তু মৃত্যুকে তো সে ফেলে এসেছে পশ্চাতে। বাঁচার জন্যই তো তাকে শহরে আসতে হয়েছে। এখানকার বিভিন্ন অলি-গলি দিয়ে ঘুরে মৃত্যুহীনতার উন্মুক্ত সদর রাস্তায় সে এসে পড়েছে। আজ আমু মৃত্যুকে ভয় পায় না।
মন্তব্য : মৃত্যুকে আমু পেছনে ফেলে এসেছে। এখন সে আর তাকে ভয় পায় না। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমুর।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a8%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a8%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%b8%e0%a7%88%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%a6-%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be/