অথবা, মারেফত কাকে বলে?
অথবা, মারেফত কী?
অথবা, মারেফত সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও।
অথবা, সংক্ষেপে মারেফত সম্পর্কে আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : বিভিন্ন তরিকার সুফিরা তাদের জীবনের লক্ষ্য অর্জনে অনেক ক্ষেত্রেই একে অপর থেকে ভিন্ন মত পোষণ করেন। সুফিরা তাত্ত্বিকতার চেয়ে ব্যবহারিক দিকের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। সুফিরা যে শিক্ষা গ্রহণ করে তা অত্যন্ত নিগূঢ়, যা অন্তর থেকে অন্তরে অতিক্রান্ত হয় বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। একজন সুফি সাধককে শিক্ষার জন্য কয়েকটি স্তর অতিক্রম করতে হয়। এই স্তরগুলোর মধ্যে মারেফত অন্যতম।
মারেফত : মারেফত বলতে বুঝায় আধ্যাত্মিক জ্যোতি। এ এমন এক জ্যোতি যা অজ্ঞান ও অসত্যের অন্ধকারকে আলোকিত করে। একে বর্ণনার মাধ্যমে বুঝান সম্ভব নয়, বরং অনুভবেই বুঝা সম্ভব। এ স্তরে সুফি সাধকের বলব আধ্যাত্মিক আলোকে আলোকিত হয়। তিনি বস্তুর নিগূঢ় অর্থ উপলব্ধি করতে শুরু করেন। সৃষ্টি রহস্যের কালো পর্দা তার
কাছ থেকে অপসারিত হয়। মারফতের আলোয় আলোকিত হয়ে সুফি আল্লাহতে নিবেদিত ও উৎসর্গকৃত হয়। এ স্তরে খোদা সাধকের হৃদয় ঐশী আলোকে দীপ্ত করে তাকে সৃষ্টির গভীর রহস্য উদঘাটনের উপলব্ধি করে তোলেন। এ স্তরে সুফিয়া বিশ্বে মানবজীবনের গুপ্ত রহস্য উদঘাটন করে ঐশী জ্ঞান প্রাপ্ত হয়। পবিত্র আল কুরআনে এরশাদ আছে, “আমার উপাসনা, আরাধনা, উৎসর্গ অনুষ্ঠান, আমার জীবন মরণ সমস্তই বিশ্ব নিয়ন্তা আল্লাহর জন্য।” সূরা-৭, আয়াত-১৬৩)। এ স্তরে সাধক পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর ধ্যানে নিমগ্ন থাকেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুফি সাধনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তর হলো মারেফত। সুফি তরিকতের মাধ্যমে মারেফতের জ্ঞান লাভ করে। এ জ্ঞানের মাধ্যমে সুফি আল্লাহ্ সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান লাভ করতে.পারবে। সুতরাং মারফতের আধ্যাত্মিক জ্ঞানের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।