মরিবে না। সে কিছুতেই মরিবে না। বনের পশু যে অবস্থায় বাঁচে না সেই অবস্থায়, মানুষ সে বাঁচিবেই।”- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পে ভিখুর বেঁচে ওঠা এবং তার জীবনীশক্তি সম্পর্কে গল্পকার এমন মন্তব্য করেছেন। ভিখু বৈকুণ্ঠ সাহার গদিতে ডাকাতি করতে গিয়ে ডান কাঁধে বর্শার খোঁচায় প্রচণ্ড আঘাত নিয়ে পালিয়ে যায় তার বন্ধু পেহ্লাদের বাড়িতে। পেহ্লাদ পুলিশের ভয়ে নিজের বাড়িতে আশ্রয় না দিয়ে জঙ্গলের মধ্যে রাখে। বৃষ্টির সময় সে ভিজে যায়, আবার রোদের সময় সে হাঁপিয়ে ওঠে বনের মধ্যে। তার কাছে তিন-চারদিনের চিড়া আছে, কিন্তু গুড় ফুরিয়ে যাওয়াতে তা আর খাওয়া হয় না। ঝাঁক বেঁধে আসা পিঁপড়াগুলো অনবরত ভিখুকে কামড়াতে থাকে। বনের মধ্যে পেহ্লাদের দেওয়া খাবার এবং পানি ফুরিয়ে আসে। ডান কাঁধ তার অকেজো হওয়ার উপক্রম হয় ভিখুর শরীর অসম্ভব যন্ত্রণায় ঘা, জ্বালা, পোকা মাকড়ের উপদ্রব, সাপের ভয়, জোঁকের ঘা থেকে বিষ রক্ত শোষণ- এসব নিয়ে জীবনটাকে বাঁচিয়ে রাখে ভিখু। বনের পশু যে অবস্থায় বাঁচে না তা থেকে কষ্টকর পরিস্থিতিতেও ভিখু বেঁচে ওঠে। কারণ সে মানুষ। সুতরাং, বলা যায় সৃষ্টার সৃষ্টির মধ্যে একমাত্র সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে কেবল মানুষই বেঁচে থাকতে পারে। ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পেও দেখা যায় প্রতিকূল পরিবেশের সাথে যুদ্ধ করে বিনাসেবা বা চিকিৎসায় ভিখু বেঁচে ওঠে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%88%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%bf/