“ব্যবস্থাপনা সমাজ ও কৃষ্টিনির্ভর”-ব্যাখ্যা কর।

ব্যবস্থাপনা একটি সামাজিক বিজ্ঞান। এটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে কাজ করে। তাই ব্যবস্থাপনা সমাজ ও কৃষ্টিনির্ভর।

ব্যবস্থাপনার মূল উদ্দেশ্য হলো সংগঠনের লক্ষ্য অর্জন করা। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যবস্থাপককে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে কাজ করতে হয়। সংগঠনের অভ্যন্তরীণ পরিবেশে কর্মচারীদের আচরণ, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, আইন-কানুন, নীতিমালা ইত্যাদির প্রভাব পড়ে। বাহ্যিক পরিবেশে অর্থনীতি, রাজনীতি, আইন-কানুন, প্রযুক্তি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রবণতা ইত্যাদির প্রভাব পড়ে।

ব্যবস্থাপককে এই সমস্ত প্রভাবকে বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। তাই ব্যবস্থাপনা সমাজ ও কৃষ্টিনির্ভর।

ব্যবস্থাপনা সমাজ ও কৃষ্টিনির্ভর হওয়ার কিছু কারণ নিম্নরূপ:

  • সংগঠন একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সংগঠনের কর্মচারী, গ্রাহক, সরবরাহকারী, বিনিয়োগকারী ইত্যাদি সবাই সমাজের সদস্য। তাই সংগঠনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, কার্যক্রম ইত্যাদি সমাজের প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত হয়।
  • ব্যবস্থাপনা একটি সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়া। ব্যবস্থাপনার মূলনীতি, ধারণা, কৌশল ইত্যাদি সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত হয়।
  • ব্যবস্থাপনা একটি যোগাযোগমূলক প্রক্রিয়া। ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। এই যোগাযোগের মাধ্যমে সংগঠনের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে একটি ইসলামী সংস্কৃতির প্রভাব রয়েছে। তাই বাংলাদেশের সংগঠনগুলোতে ইসলামী মূল্যবোধের প্রভাব দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, অনেক সংগঠনে নারীদের জন্য পর্দার বিধান রয়েছে। আবার, অনেক সংগঠনে জুমার নামাজের জন্য ছুটির ব্যবস্থা রয়েছে।

সুতরাং, বলা যায় যে, ব্যবস্থাপনা সমাজ ও কৃষ্টিনির্ভর। ব্যবস্থাপককে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক পরিবেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাবকে বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়।