ব্যবস্থাপনা চিন্তাধারা হল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিভিন্ন লেখক, গবেষক ও চিন্তাবিদদের দ্বারা প্রদত্ত ধারণা, তত্ত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গির সমষ্টি। এটি ব্যবস্থাপনার ইতিহাস ও বিকাশের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ব্যক্তির অবদানের প্রতিফলন। ব্যবস্থাপনা চিন্তাধারার মূল লক্ষ্য হল প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কার্যকর ব্যবস্থাপনার উপায়-উপকরণ নির্ধারণ করা।
ব্যবস্থাপনা চিন্তাধারার সংজ্ঞা প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন ধরনের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিচে কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হল:
- হিলিয়ার্ড (Hilliard) এর মতে, “ব্যবস্থাপনা চিন্তাধারা হল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত বিভিন্ন লেখক, গবেষক ও চিন্তাবিদদের দ্বারা প্রদত্ত ধারণা, তত্ত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গির সমষ্টি।”
- স্টেয়ার্ন (Steere) এর মতে, “ব্যবস্থাপনা চিন্তাধারা হল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারা প্রদত্ত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ধারণা ও দৃষ্টিভঙ্গির একটি সমন্বয়।”
- ডোডসন (Dodson) এর মতে, “ব্যবস্থাপনা চিন্তাধারা হল ব্যবস্থাপনার ইতিহাস ও বিকাশের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ব্যক্তির অবদানের প্রতিফলন।”
উপরোক্ত সংজ্ঞাগুলো থেকে বোঝা যায় যে, ব্যবস্থাপনা চিন্তাধারা হল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত বিভিন্ন লেখক, গবেষক ও চিন্তাবিদদের দ্বারা প্রদত্ত ধারণা, তত্ত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গির সমষ্টি। এটি ব্যবস্থাপনার ইতিহাস ও বিকাশের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ব্যক্তির অবদানের প্রতিফলন।
ব্যবস্থাপনা চিন্তাধারার বিকাশকে মূলত তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়:
- প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় পর্যায় (Ancient and Medieval Period): এই পর্যায়ে ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত ধারণাগুলো ছিল প্রাকৃতিক ও ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে। এই পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য চিন্তাবিদদের মধ্যে রয়েছেন সক্রেটিস, প্লেটো, অ্যারিস্টটল, ম্যাকিয়াভেলি, টমাস অ্যাকুইনাস প্রমুখ।
- আধুনিক পর্যায় (Modern Period): এই পর্যায়ে ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত ধারণাগুলো বিজ্ঞান ও যুক্তির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। এই পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য চিন্তাবিদদের মধ্যে রয়েছেন ফ্রেডেরিক উইনস্লো টেলর, হেনরি ফেয়োল, ফ্রেডরিক টেইলর, ম্যাকগ্রেগর, ম্যাকইয়োর্স প্রমুখ।
- আধুনিকতম পর্যায় (Contemporary Period): এই পর্যায়ে ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত ধারণাগুলো পরিবর্তনশীল পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে শুরু করে। এই পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য চিন্তাবিদদের মধ্যে রয়েছেন পিটার ড্রাকার, প্রেড্রেক ব্রুন, জোহানসন, নাইসবেন্ডার প্রমুখ।
ব্যবস্থাপনা চিন্তাধারা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কার্যকর ব্যবস্থাপনার উপায়-উপকরণ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ব্যবস্থাপনা শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।