অথবা, বিশ্বায়নের উদ্ভব সম্পর্কে লিখ।
অথবা, বিশ্বায়নের উদ্ভব সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
অথবা, বিশ্বায়নের উদ্ভব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বিশ্বব্যবস্থার অন্যতম ধারণা হলো বিশ্বায়ন (Globalization)। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বিশ্বায়নের এ ধারণা একবিংশ শতাব্দীর ধারণার সাথে অনেক ক্ষেত্রে ব্যবধান সৃষ্টি করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর বিশ্ব রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বিশ্বায়নের প্রয়োজনীয়তা অনেকে উপলব্ধি করেছিলেন। কিন্তু সমকালীন বিশ্বায়ন বিরোধী জোট খুব তৎপর থাকায় তা তেমন ব্যাপকতা লাভ করতে পারেনি। ১৯৯০ এর দশকে এসে বিশ্বায়ন বিরোধী জোট তাসের ঘরের মত ভেঙে গেলে বিশ্বায়নের প্রবক্তাদের তেজ বেড়ে যায়। যার ফলশ্রুতিতে আজ বিশ্বায়নের এ বিস্তৃতি বা ব্যাপকতা লাভ ।
বিশ্বায়নের উদ্ভব : ‘Globalization’ শব্দটি নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের উপর সীমাবদ্ধ নয়। Globalization শব্দটি বিশ্বজনীন বা সার্বজনীন। Globalization এর ধারণা অতীতে ছিল, বর্তমানেও আছে, ভবিষ্যতে হয়তবা আরও ব্যাপকতা লাভ করবে। তবে একবিংশ শতকে আমরা যে বিশ্বায়নের কথা বলছি তা ব্যাপকতা লাভ করেছিল দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধোত্তর যুগের ঠাণ্ডা লড়াইয়ের পরবর্তী যুগে। ঠাণ্ডা লড়াই এর পরবর্তী যুগে Present day Globalization বিকশিত হয় সেভিয়েত নেতা মিখাইল গর্ভাচেভের ‘Perestroika’ ও ‘Glasnost’ নীতি থেকে। গর্ভাচেভ তাঁর এ নীতির মাধ্যমে চেয়েছিলেন, Globalrestructuring, Openness, A new way of global thinking, Peace for all. বৃহৎ শক্তির মধ্যে সহযোগিতা এবং ঠাণ্ডা লড়াইয়ের পরিসমাপ্তি। তিনি এ নীতির মাধ্যমে সেভিয়েত ইউনিয়নকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এটা ছিল তাঁর একজন পাকা জুয়াড়ির ভুলে চাল দেওয়ার সমতুল্য। তাই এটা হীতে বিপরীত হয়ে যায়। এ ধরনের আবহাওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিনিয়র জর্জ ডব্লিউ বুশ বিশ্বায়ন ধারণাটিকে নতুন মোড়কে উন্মোচন করেন। যার মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বায়নের এত বিস্তৃতি লাভ ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, বিশ্বায়নের উদ্ভব এক নাটকীয়তার ফল। তাছাড়া ধারণাটি নতুন নয়, এর অস্তিত্ব পূর্বেও ছিল, তবে ভিন্নভাবে ও ভিন্ন গতিতে। অতীতের কলম্বাস, ভাস্কো-দা-গামা, লিভিংস্টোন প্রমুখ দুঃসাহসী সমুদ্র বিজয়ী অভিযাত্রীর ভৌগোলিক আবিষ্কার অথবা বিভিন্ন দেশের বণিকদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা অথবা বিভিন্ন দেশের বণিকদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা অথবা হিউয়েন সাং, ফাহিয়েন, আলবেরুনী, ইবনে বতুতা, মার্কো পলোর মতো পরিব্রাজকদের বিশ্বাসফলকে বিশ্বায়নের প্রাথমিক পর্যায় বা সূচনা বলা যায়।