বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির কর্মকৌশলসমূহ লিখ।

অথবা, বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির কর্মকৌশল আলোচনা কর।
অথবা, বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির কর্মকৌশল ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷৷ ভূমিকা :
১৯৫৩ সালের ২ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের অধ্যাপক ড. হুমায়রা সাঈদের নেতৃত্বে এবং এদেশের কতিপয় বরেণ্য সমাজসেবীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পরিবার পরিকল্পনা সমিতি গড়ে উঠে। ড. হুমায়রা সাঈদ ছাড়াও যেসব বরেণ্য সমাজসেবীগণ এ সমিতি গঠনে এগিয়ে আসেন তাঁরা হলেন জাতীয় অধ্যাপক ও বারডেম এর প্রতিষ্ঠাতা ড. মোঃ ইব্রাহিম, ড. হামিদা মালিক, বেগম রইসুন্নেছা হক, মোঃ নাসিম ও আলমগীর এম. এ. কবীর।
বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির কর্মকৌশল : নিম্নে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির কর্মকৌশলসমূহ
উল্লেখ করা হলো:
১. অল্প বয়সী ন্যূনতম সন্তানের জনক-জননীদের কাজে নিয়োগ ও টিকিয়ে রাখার প্রতি গুরুত্বারোপসহ স্বল্প সেবাপ্রাপ্ত এলাকা বা কমিউনিটিভিত্তিক চিকিৎসা সুবিধা ও বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে সক্ষম দম্পতিদের উন্নতমানের পরিবার পরিকল্পনা এবং মাতৃত্ব মঙ্গল সেবা প্রদান।
২. পরিবার পরিকল্পনা সেবার চাহিদা সৃষ্টির লক্ষ্যে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন অনুসারে চাহিদাভিত্তিক তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ কার্যক্রমের উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন।
৩. ব্যবহারিক শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে যুবসমাজ ও নির্দিষ্ট শ্রেণিভুক্তদের অধিক অংশগ্রহণে সহযোগিতা করা এবং ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী এবং গণযোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে জনসংখ্যা, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, যৌন রোগ, এইডস এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা শিক্ষাদান।
৪. মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ব্যবহারিক শিক্ষা বৃদ্ধি, জনসংখ্যা, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক শিক্ষাদান, দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দান এবং রোজগারি কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক ও উপকরণাদিতে সহযোগিতা প্রদান।
৫. সামাজিক কর্তৃত্বের লক্ষ্যে নেতাদের ব্যবস্থাপনার দক্ষতা শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্ত বায়নের সকল স্তরে তাদের সংশ্লিষ্টকরণ।
৬. উচ্চ মানসম্পন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও কর্মচারী নিয়োগ এবং তাদের ধরে রাখা। মহিলাদের সকল পর্যায়ে অধিক মাত্রায় উৎসাহ দান এবং উন্নত ব্যবস্থাপনায় যথোপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদান।
৭. অনুসরণযোগ্য গবেষণা ও পরীক্ষামূলক পরিকল্পনা ও নকশায়ন এবং বাস্তবায়ন।
৮. সম্পদের অধিকতর সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ও উপকরণাদি সরবরাহে সমন্বয়সাধন; সরকারি ও অন্যান্য বেসরকারি সংস্থার প্রশিক্ষণের সহযোগিতা প্রদান এবং তথ্য শিক্ষা ও যোগাযোগ উপকরণ সরবরাহ।
৯. তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ এবং অন্যান্য তৎপরতার মাধ্যমে জনসংখ্যা ও পরিবেশের মধ্যকার ভারসাম্য উন্নয়ন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে অধিকতর গণসচেতনতা সৃষ্টি।
১০. আংশিক স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে স্থানীয় সম্পদের ব্যবহার, আত্মসেবা প্রদান, ব্যয় হ্রাস এবং ভৌত অবকাঠামো গড়ে তোলা।
উপসংহার : বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা জনসংখ্যা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গবেষণা ও জরিপ কার্যাবলি পরিচালনা করে থাকে। তাছাড়া লক্ষ্য দলভুক্তদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ছাড়াও জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহ করে থাকে।এছাড়া পরিবার পরিকল্পনা সমিতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করছে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a4%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a8-%e0%a6%95/