বাংলাদেশে শিশু অধিকার ফোরামের কার্যাবলি লিখ।

উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ শিশুরা পবিত্র, ভালবাসার প্রতীক। শিশুরাই শান্তির সুবাতাস ছড়াতে সক্ষম। শিশুদের কল্যাণ সাধন মানেই জাতির কল্যাণ সাধন। এই শিশুরাই ভবিষ্যৎ জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা। তাই তাদের দৈহিক, মানসিক, তথা সার্বিক বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের দরিদ্র, ছিন্নমূল শিশুদের কল্যাণার্থে ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম। এর কিছু গুরুত্ব কার্যাবলি সারাদেশের শিশুদের অধিকার সংরক্ষণে বেশ সহায়ক হচ্ছে।
→ বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের কার্যাবলি ঃ বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের কার্যাবলি নিম্নে বর্ণিত হলো :
১. শিশু অধিকার সংরক্ষণ ঃ বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে শিশু অধিকার সংরক্ষণ করা। এজন্য এটি ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও আইনি সহায়তা প্রদান করছে।
8
২. শিশুশ্রম উচ্ছেদ ঃ শিশুশ্রম একটি দেশের জন্য অত্যন্ত খারাপ ভবিষ্যৎ বয়ে আনে। তবুও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে ক্রমাগত শিশুশ্রম চলছে। তাই শিশু শ্রম উচ্ছেদে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) কে ১৮২ নং সনদ
অনুমোদনে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান প্রভৃতি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও ভূমিকা রাখে।
৩. শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালনা ৪ হাজার হাজার শিশুদের শিক্ষা-চিকিৎসা নিশ্চিতকল্পে শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট গঠন ও তা পরিচালনায় বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। ফলে শিশুদের বিকাশ গতিশীল হবার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।
৪. জাতীয় শিশু কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা ঃ বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম জাতীয় শিশু কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে সরকারকে সার্বিকভাবে সহয়তা প্রদানসহ কৌশল অবলম্বনের পথও নির্দেশ করে থাকে।
৫. সচেতনতা সৃষ্টি ঃ আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ অশিক্ষিত। তারা শিশুদের কোনো মূল্যায়ণই করে না। তাছাড়া মেয়ে শিশুদেরকে তারা কুনজরে দেখে। শিশুরা যে জাতির ভাগ্যোন্নয়নে সর্বাপেক্ষা ভূমিকা রাখতে সক্ষম এটা তাদের জানা নেই। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম পত্র-পত্রিকাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের গুরুত্ব তুলে ধরার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যার দরুন শিশুদের প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটতে
শুরু করেছে।
৬. শিশুকল্যাণ ঃ শিশুকল্যাণ সাধন ও শিশু অধিকার ফোরামের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ তাই এই ফোরাম এদেশের লাখ লাখ এতিম, অসহায়, ছিন্নমূল শিশুদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও শিক্ষা প্রভৃতি মৌল মানবিক চাহিদা পূরণে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
৭. আইনি সাহায্য প্রদান ঃ শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও কল্যাণ সাধনের ক্ষেত্রে আইনি সহায়তাও প্রদান করে থাকে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম।
৮. সমন্বয় সাধন ঃ শিশু বিষয়ক দেশের সমস্ত সংস্থার কাজের সুসমন্বয় সাধন করে থাকে এই ফোরাম। ফলে শিশুদের কল্যাণ আরো জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভবপর হয়ে উঠে।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম এদেশের শিশুদের অধিকার ও কল্যাণে সর্বাগ্রে অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। ফলে দ্রুত শিশুদের সার্বিক বিকাশ সাধন হচ্ছে। তাই বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের কার্যাবলি অত্যন্ত আবশ্যক।