উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ পল্লি উন্নয়ন পল্লি জনসমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সবচেয়ে বড় উদ্যোগ। পল্লি উন্নয়নের
মাধ্যমেই দেশের উন্নয়ন বেগবান করা সম্ভব। তবে পল্লি উন্নয়নকে হতে হবে সুসংগঠিত উপায়ে ও যথার্থ পদ্ধতি । আর এর লক্ষ্যে বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যা বাংলাদেশের পল্লি সমাজের এক দারুন পরিবর্তন আনয়নে সক্ষম হয়েছে। তাই বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ডের গুরুত্ব বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ডের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঃ বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ডের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো নিম্নরূপ :
১. কুটির শিল্পের বিকাশ ঃ সারাদেশে কুটির শিল্পের বিকাশ ঘটানো। যাতে করে পল্লির নারীরা কর্মে প্রযুক্ত হয়ে তাদের সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা আনয়নে সক্ষম হয়। যা বেকারত্ব কমাতে সাহায্য করে।
২. সমবায় সমিতি পরিচালনা ঃ এই পল্লি উন্নয়ন বোর্ডের অন্যতম আরেকটি লক্ষ্য হচ্ছে পল্লির জনগণের সমন্বয়ে সমবায় সমিতি গঠন ও সুষ্ঠুভাবে তা পরিচালনা। যাতে করে পল্লির জনগণের মনোভাব বাড়ানো যায় ।
৩. কৃষি উৎপাদন সংশ্লিষ্ট সমস্যার সমাধান ঃ দেশের কৃষি উৎপাদন যাতে বেগবান হয় সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশে পল্লি উন্নয়ন বোর্ড কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে যথেষ্ট সচেষ্ট হয়। যেমনঃ সেচ প্রদানে বিদ্যুৎ সরবরাহ, সারে ভর্তুকি প্রদানে উদ্যোগ ও প্রভৃতি পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে।
৪. প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা : কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার ক্ষুদ্র কুটির শিল্প স্থাপন ও গবাদি পশু পাখি পালনের ব্যাপারে বেশ কিছু প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। যাতে পল্লির জনগণ নিজেরাই নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে পারে।
৫. মহিলোাাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা : পল্লিতে নারীদের কর্মসংস্থান করাটা অধিক জরুরি। কেননা বাংলাদেশের পল্লিগুলোর নারী সমাজ থাকে কর্মশূন্য। ফলে পরিবারের উন্নয়নে তারা অবদান রাখতে পারে না। তাছাড়া স্বামীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে জীবনযাপনে নারী ব্যক্তিত্বের নাশ ঘটে থাকে।
৬. কৃষি ব্যবস্থার উন্নতি সাধন ঃ কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধনই বাংলাদেশে পল্লি উন্নয়ন বোর্ডের অন্যতম উদ্দেশ্য। কৃষির উন্নতি বিধানকল্পে এটি খাদ্যশস্য মজুদকরণ, সংরক্ষণ, সেচ সুবিধা বৃদ্ধি, কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ ও যথাযথভারে পরিবহনের ব্যাপারে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। এছাড়াও কৃষিকাজে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার নিশ্চিত করে।
৭. ঋণদান ঃ পল্লির জনগণের পুঁজি গঠনে এটি ঋণদানের ব্যবস্থা রাখে। কম সুদেও সহজশর্তে এই ঋণদান করে পল্লির সার্বিকল্যাণ ঘটানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। ফলশ্রুতিতে পল্লিতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গড়ে উঠেছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশে পল্লি উন্নয়ন বোর্ড পল্লির জনগণের জীবনমান পরিবর্তনে প্রতিষ্ঠালগ্ন
হতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়নে সরকারকে হতে হবে বেশ উদ্যোগী। তাই এই পল্লি উন্নয়নের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের গুরুত্ব পল্লিজীবনে অনস্বীকার্য। বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের ন্যায় বাংলাদেশও এতে যোগ করে নতুন নতুন কর্মসূচি ও পূর্ণ সহায়তা। তাই বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন বোর্ডই পারে বাংলাদেশের সফলভাবে আর্থ-সামাজিক সফলভাবে রূপ বদলাতে।