উত্তর ঃ ভূমিকা : জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ বাংলাদেশের সমাজকল্যাণকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। সরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশে সুসংগঠিত সমাজকল্যাণের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে এই জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদে । মাধ্যমে। বিদ্যমান সকল সমাজকল্যাণমূলক সংস্থাকে উৎসাহদানে সর্বাগ্রে ভূমিকা রাখে এটি। তবে এর কিছু সমস্য ও রয়েছে। আর তা সুষ্ঠুভাবে সমাধানের মাধ্যমেই জাতীয় সমাজকল্যাণ
পরিষদকে আরো দক্ষ ও কার্যকরী করা সম্ভবার।
জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের সমস্যাসমূহ ঃ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের সমস্যাসমূহ নিম্নে তুলে ধরা হলো ঃ
১. আর্থিক দুর্বলতা ঃ যে-কোনো পরিষদ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আর্থিক দৃঢ়তা থাকা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন আজও সম্ভব হয়নি। যার দরুন বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে এটি হিমশিম খাচ্ছে।
২. দক্ষ জনবলের অভাব ঃ বাংলাদেশে লাখ লাখ কর্মজীবী থাকলেও তারা তেমন দক্ষ নয়। এটি জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের ক্ষেত্রেও তা ঘটেছে। ফলশ্রুতিতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না।
৩. প্রশিক্ষণের অভাব ঃ যথার্থভাবে প্রশিক্ষণ পরিচালনার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের অধীনে নেই । আর তাই বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে জনবলকে প্রশিক্ষণ দেওয়াও সম্ভবপর হয়ে উঠে না।
৪. জনসমর্থনের অভাব : জাতীয় উন্নয়ন পরিষদের কার্যক্রমগুলোতে সরকারি কর্মকর্তারাই অংশগ্রহণ করে থাকে। ফলে সেগুলোতে সাধারণ জনগণের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয় না আবার জনসমর্থনও পাওয়া যায় না।
৫. যথার্থ বেতন-ভাতাদির অভাব ঃ এই পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথার্থ বেতন-ভাতাদির ব্যৱস্থা না থাকাতে তারা স্ব স্ব কর্মে মনোযোগী হয় না। যার দরুন এই পরিষদের বিভিন্ন কার্যক্রম সফলতার মুখ দেখে না।
৬. মূল্যায়নের অভাব ঃ পরিষদ থেকে ভালো কোনো কর্মসূচি গ্রহণ বা সাফল্যের জন্য মূল্যায়ণ করা হয় না, এতে করে তারা নতুন কিছু সৃষ্টিতে আগ্রহী হয়ে উঠে না।
৭. প্রচার-প্রচারণার অভাব ঃ এই পরিষদের বিভিন্ন কার্যক্রমকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে বই-পুস্তক পত্র-পত্রিকার প্রয়োজন। যা এতে অনুপস্থিত রয়েছে।
৮. নিজস্ব স্থাপনার অভাব ঃ বর্তমানে সমাজকল্যাণ পরিষদের নিজস্ব স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। স্থাপনার অভাবে এই পরিষদ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় বাধার সম্মুখীন হয়।
সমস্যা সমাধানের উপায় ঃ
১. দক্ষ সমাজকর্মী গড়ে তোলা : উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য শিক্ষাদানের মাধ্যমে দক্ষ সমাজকর্মী গড়ে তুলতে পারলে জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের কার্যক্রম ফলপ্রসূ হবে।
২. গবেষণায় পরিচালনাঃ সমাজস্থিত নানা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গবেষণা পরিচালনা করতে হবে নিয়মিতভাবে। তবেই সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটবে।
৩. সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন : নিয়মিত সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজনের মাধ্যমে পরিষদের কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনয়ন সম্ভব এবং এর ফলে পরিষদের কর্মকাণ্ড এবং পরিধি অনেকাংশ সম্প্রসারিত হয়।
৪. নতুন নতুন কর্মসূচি গ্রহণ : জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ যদি নতুন নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করলেই এর বিদ্যমান সমস্যার দ্রুত সুরাহা সম্ভব হবে।
৫. আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ঃ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে পারলে পরিষদের সকল কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা ফিরে আসবে। তাই, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ফিরে আসবে। তাই, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৬. যথার্থ বেতনভাতা প্রদান ঃ এই পরিষদের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যথার্থ বেতন ভাতা প্রদান করা হলেই কেবল এর কার্যক্রম উন্নত হবে।
৭. প্রচার প্রচারণা : সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন ক
র্মকাণ্ড সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ এগিয়ে নেয়া সম্ভব।
৮. অর্থ তহবিল গঠন ঃ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের সমগ্র কর্মকাণ্ড ও কর্মসূচিকে বাস্তবায়নের জন্য অর্থ তহবিল গঠন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশের অসহায়, দুর্বলদের পাশে জাতীয় সমাজকল্যাণ সংস্থা ছায়ার মত দাঁড়িয়েছে। ফলে এ দেশবাসীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে বেশ গতিশীল। তাই সরকারকে এই পরিষদের উন্নয়নে অত্যন্ত তৎপর হতে হবে।