অথবা, বাংলাদেশের দারিদ্র্যের গতিধারা ও দারিদ্র্যের পরিমাপের পদ্ধতি উল্লেখ কর।
অথবা, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের গতিধারা ও দারিদ্র্যের পরিমাপের পদ্ধতিগুলো লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : দরিদ্র বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রধান সমস্যা দারিদ্র্য। আর দারিদ্রের কারণে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।
দারিদ্র্যের গতিধারা : ১৯৯১-৯২ সাল থেকে ২০০০ সালের মধ্যে (CB বা পরিমাপকৃত) আয় দারিদ্র্যের হার ৫৮.৮ শতাংশ থেকে ৪৮.৯ শতাংশে নেমে আসে। এ হ্রাসের যৌগিক হার বার্ষিক ১.৮ শতাংশ তবে দারিদ্র্যের হার শহর এলাকায় অধিক পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। অপরদিকে, ২০০০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে আয় দরিদ্র হার ৪৮.০৯ শতাংশ থেকে ৪০.০ শতাংশে নেমে এসেছে। এ হ্রাসের যৌগিক হার বার্ষিক ৩.৯ শতাংশ। এ সময়কালেও দারিদ্র্যের হার শহর এলাকায় অধিক হ্রাস পেয়েছে। ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত নগর ও পল্লি উভয় এলাকায় দারিদ্র্যের গভীরতা র্যবধান দ্বারা পরিমাপকৃত ও তীব্রতা (দারিদ্র্য ব্যবহারের বর্গ দ্বারা পরিমাপকৃত) প্রায় সমভাবে হ্রাস পেয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৯১-৯২ সাল থেকে ২০০০ সালের মধ্যে পল্লি এলাকার আয় দারিদ্র্যের গভীরতা ও তীব্রতা হ্রাসের হার শহর এলাকার চেয়ে অধিক ছিল।
বাংলাদেশে দারিদ্র্য পরিমাপ : বাংলাদেশে সর্বপ্রথম খানা ব্যয় জরিপ ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছর পরিচালিত হয় এবং পরবর্তীকালে আরো কয়েকটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। সর্বশেষ খানা আয় ব্যয় জরিপ চালানো হয় ২০০৫ সালে। ১৯৯১-৯২ পর্যন্ত পরিচালিত খানা ব্যয় জরিপে দেশের দরিদ্র পরিমাপের জন্য খাদ্য শক্তি গ্রহণ এবং প্রত্যক্ষ ক্যালরি গ্রহণ পদ্ধতি অনুসরণ করা হতো। দারিদ্র্য পরিমাপে জনপ্রতি ২১২২ কিলোক্যালরির নিচে খাদ্য গ্রহণকে অনপেক্ষ দারিদ্র্য হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রথমবারের মতো ১৯৯৫-৯৬ সালে খানা জরিপে মৌলিক চাহিদা ব্যয় পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। অনুরূপভাবে ২০০০-২০০৫ সালের জরিপে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিতে দারিদ্র্যসীমা পরিমাপে খাদ্য বহির্ভূত ভোগ্য পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিবিএস কর্তৃক সর্বশেষ পরিচালিত খাদ্য আয় ও ব্যয় জরিপ ২০০৫ এর তথ্য।
উপসংহার : আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আগের তুলনায় এখন দারিদ্র্য হার অনেক হ্রাস পেয়েছে।