অথবা, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রকৃতি আলোচনা কর।
অথবা, বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যাবলি আলোচনা কর।
অথবা, বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি কৃষিপ্রধান দেশ। বিশ্বের দরিদ্র ও জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। স্বল্প উৎপাদনের জন্য এদেশের মাথাপিছু আয় ও জীবনযাত্রার মান নিচু। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এ দেশটিতে দারিদ্র্য বিমোচন ও জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে অব্যাহত উন্নয়ন প্রচেষ্টা চালান হচ্ছে। ফলে উন্নয়নের জন্য আর্থসামাজিক ভিত্তি রচিত হয়েছে এবং দেশের অর্থনীতি ক্রমেই উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
বৈশিষ্ট্য : বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ :
১.কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান ও একক বৃহত্তম খাত।
২.কৃষিপ্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থা অনুন্নত ও নিম্ন উৎপাদনশীল।
৩.স্বাধীনতার পর দক্ষ উদ্যোক্তার অভাব, পর্যাপ্ত শিল্প মূলধনের অভাব, ত্রুটিপূর্ণ শিল্পনীতি, অনুন্নত অবকাঠামো প্রভৃতি কারণে এদেশের শিল্পখাত উন্নত ও সম্প্রসারিত হয়নি।
8.জমি ও অন্যান্য সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যাবৃদ্ধির হার বেশি।
৫.জনসংখ্যাবৃদ্ধির তুলনায় বিনিয়োগ স্বল্প এবং কৃষিখাত অনুন্নত।
৬. এজন্য বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান মাত্রায়
বেকারত্ব বিদ্যমান। বাংলাদেশে স্বল্প উৎপাদন, জনসংখ্যাধিক্য ও ব্যাপক বেকারত্বের জন্য মাথাপিছু আয় খুব কম ৷
৭. বিনিয়োগযোগ্য পুঁজি ও কারিগরি দক্ষতার অভাবে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ও উদ্বৃত্ত জনশক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার সম্ভব হয় না। ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পায় না।
৮.বাংলাদেশে উৎপাদন ও আয়ের স্বল্পতার জন্য সঞ্চয় ও পুঁজি গঠন খুব কম। ফলে বিনিয়োগযোগ্য পুঁজির তীব্র
অভাব বিদ্যমান।
৯.ব্যাপক নিরক্ষরতার জন্য এদেশের শ্রমশক্তির দক্ষতা কম যা উন্নয়নের গতিকে ব্যাহত করে।
১০. শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং জ্ঞানবিজ্ঞানের অনগ্রসরতার জন্য বাংলাদেশে কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষ শ্রমশক্তির যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি দরিদ্র দেশ। তাই এর অর্থনীতিতেও দারিদ্র্যের ছাপ সুস্পষ্ট।