উত্তর : কবি এই কবিতাটিতে মৃত্যুহীন মানবসত্তার অন্তর্লোককে উজ্জীবিত করা মহিমাময়ী প্রেমের জয়গান গেয়েছেন। অনস্ত কাল ধরে টিকে থাকা পৃথিবী তার ছোট ছোট পিঞ্জরে আমাদের জীবনকে লালন করে থাকে। ব্যক্তিসত্তার সকল খেলার সীমা সেই নির্দিষ্ট পিঞ্জরে আবদ্ধ। তাই জন্ম ও মৃত্যুর মধ্যবর্তী খেলাটুকু শেষ করে ব্যক্তি এক সময় মৃত্যুতে লীন হয়ে যায়। কিন্তু ব্যক্তিসত্তার মৃত্যু ঘটলেও মৃত্যু ঘটে না মানবসত্তা ও সভ্যতার। হাজার হাজার বছর ধরে এই মানবসত্তা সভ্যতার নানান উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বুকে আপন অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। কবি তাঁর আপন চেতনায় অবিনাশী মানবসত্তার যুগ যুগ ধরে পথ চলার গতি ও ক্লান্তি অনুভব করেছেন। সেই মৃত্যুহীন মানবসত্তার অভিজ্ঞতা বুকে নিয়ে হাজার বছর ধরে তিনি হেঁটে চলেছেন পৃথিবীর পথে পথে। সুবিস্তৃত প্রাচ্যের সিংহল সমুদ্র থেকে রাতের অন্ধকারে মালয় সাগর পর্যন্ত তিনি পাড়ি দিয়েছেন সমুদ্র পথে। অনেক ঘুরেছেন তিনি। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ থেকে তৃতীয় শতকের পরাক্রান্ত রাজা বিম্বিসার ও আশোকের যে জগৎ বর্তমানে বিস্মৃতপ্রায় অতীতের কোলে আশ্রয় নিয়ে ধূসর হয়ে পড়েছে, সেই জগতেও তিনি অবস্থান করেছেন। যেখান থেকে আরো দূরবর্তী কালের অন্ধকারে ঢাকা পড়েছে যে বিদর্ভ নগর, সেই নগরীর পথও তিনি পেরিয়ে এসেছেন। আর এই বিস্তৃীর্ণ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে কবি এখন এক ক্লান্ত পথিক। সমুদ্রের বুকে একের পর এক তরঙ্গের অভিঘাতে যেমন সাদা ফেনার সৃষ্টি হয়, কবি তাঁর চলার পথের দুধারে জীবনের যে বিচিত্র তরঙ্গকে উছলে উঠতে দেখেছেন, তা এখন সেই সমুদ্র তরঙ্গের মতোই সফেন হয়ে উপচে পড়েছে তাঁর চতুর্দিকে। এই সফেন জীবন সমুদ্রের মধ্যে কবি দু’দণ্ড শান্তি পেয়েছিলেন নাটোরের বনলতা সেনের কাছে।
ডিগ্রী অনার্স মাস্টার্স পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে পেতে Whatsapp এ ম্যাসেজ করুন। Whatsapp 01979786079