বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে পরিত্যক্ত সম্পত্তি দখলীকরণ আইন সম্পর্কে আলোচনা কর।

অথবা, বঙ্গবন্ধুর শাসনকালে বিশেষ ক্ষমতা আইন সম্পর্কে আলোচনা কর।
উত্তর :
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার অব্যবহিত পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে তিনি নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাঁর কিছু কর্মসূচি সমালোচনার সম্মুখীন হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন।
১৯৭৪ এর বিশেষ ক্ষমতা আইন : এটা বঙ্গবন্ধুর শাসনকালে নেওয়া সমালোচিত এক আইন। যদিও বলা হয় এ আইনের মাধ্যমে দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু কোনো কোনো ঐতিহাসিক মনে করেন, এর মাধ্যমে তিনি বিরোধী মতাদর্শের লোকদের দমানোর পরিকল্পনা করেন। ফলে এ নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়। ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ আইন প্রণয়ন করেন। এ আইনে নিবর্তনমূলক আইনের বিধান রাখা হয়। অর্থাৎ সরকার যে কোনো ব্যক্তিকে “ক্ষতিকর কার্য থেকে বিরত রাখতে আইন করতে পারবে।” এ আইনের ১৫নং ধারায় ক্ষতিকর ধ্বংসাত্মক কাজ, ১৬নং ধারা বলে ক্ষতিকর রিপোর্ট প্রকাশ, ১৭ ও ১৮নং ধারা বলে কোনো দলিল তৈরি, মুদ্রণ বা প্রকাশনা এবং কতিপয় বিষয় প্রকাশনা থেকে যে কোনো ব্যক্তিকে বা সংবাদ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। ১৯ ও ২০ নং ধারা বলে শান্তি ও শৃঙ্খলায় হুমকিস্বরূপ কোনো ব্যক্তি বা দল বা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করার বিধান করা হয়। মোটকথা এ আইনের মাধ্যমে যদিও বলা হয় সমাজবিরোধী কার্যাবলি থেকে দেশকে মুক্ত রাখার ব্যবস্থা করা হবে। তথাপি এর মাধ্যমে বিরোধী মতাদর্শ বা দলকে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়। ফলে অনেক ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের এ বিশেষ ক্ষমতা আইনের সমালোচনা করে। তবে এ আইনটি এখন পর্যন্ত কোনো সরকার বাতিল করেনি।