ফলিত মনোবিজ্ঞান বলতে কী বুঝ? অথবা, ফলিত মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা দাও ।

রকেট সাজেশন
রকেট সাজেশন

উত্তর:

ভূমিকা : মানুষ, প্রাণীর আচরণ এবং মানসিক প্রক্রিয়া নিয়ে মনোবিজ্ঞান গঠিত। আর মনোবিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হলো মানুষ এবং প্রাণীর আচরণ। কারণ মানুষ ও প্রাণীর আচরণ বাহির হতে পরোক্ষ করা যায়। মানুষের আচরণের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে, বিধায় সেগুলোকে কেন্দ্র করে মনোবিজ্ঞানের নানা প্রকার শাখা বিকাশ লাভ করেছে। তার মধ্যে একটি অন্যতম শাখা মানুষের প্রাত্যহিক সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। মনোবিজ্ঞানের এই প্রায়োগিক তথা ব্যবহারিক শাখাটিই ফলিত মনোবিজ্ঞান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

ফলিত মনোবিজ্ঞান : মনোবিজ্ঞানের যে শাখা মানুষের দৈনন্দিন বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকে, তাকে ফলিত বা ব্যবহারিক বা প্রায়োগিক মনোবিজ্ঞান বলা হয়। কারণ মনোবিজ্ঞানের এ শাখা হাতে কলমে তৎক্ষণাৎ সমস্যার সমাধান করে থাকে। ফলিত মনোবিজ্ঞান মানবজীবনের বাস্তব সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করে। মানুষের ব্যবহারিক কল্যাণে মনোবিজ্ঞানকে যথার্থভাবে প্রয়োগ করার জন্য নানা ধরনের পদ্ধতি ও কৌশল সৃষ্টি করাই ফলিত মনোবিজ্ঞানের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য। এ শাখা মনোবিজ্ঞানের সকল তত্ত্বীয় জ্ঞানকে ব্যবহার করে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের নানা ধরনের সমস্যা সমাধানের প্রয়াস চালায়। প্রত্যেক ফলিত মনোবিজ্ঞানীই মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে বাস্তব এবং মৌলিক জ্ঞান লাভ করেন এবং অর্জিত জ্ঞান বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োগ করে থাকেন। ফলিত মনোবিজ্ঞানী মানুষের নানা প্রকার সমস্যা সমাধানের জন্য মনোবিজ্ঞানের মূলনীতিগুলো ব্যবহার আরও করেন। সাধারণভাবে বলা যায়, ফলিত মনোবিজ্ঞান মনোবিজ্ঞানের পরীক্ষণলব্ধ তথ্য, তত্ত্ব এবং মনোবৈজ্ঞানিক মূলনীতিসমূহকে প্রয়োগ করে মানুষের নানা ধরনের সমস্যা সমাধানের প্রয়াস চালায়। তাই বর্তমানে ফলিত মনোবিজ্ঞানের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়।

উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের উল্লিখিত দিকগুলো ছাড়াও মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান আরও অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। মানুষের জীবনযাত্রার মান যত উন্নত হচ্ছে এবং পৃথিবী যত শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষের মানসিক সমস্যা তত প্রকট আকার ধারণ করছে। আর এ সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যাপক হারে মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যবহৃত হচ্ছে। পরিশেষে বলা যায়, উন্নত এবং অনুন্নত উভয় জীবনেই মানুষ অস্বভাবী আচরণ আর তা সংশোধনের জন্য মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান দরকার। সুতরাং ফলিত মনোবিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই ।