[ad_1]
প্ৰশ্নঃ বাংলাদেশে বেসরকারি সঞ্চয় বৃদ্ধির উপায়গুলো বর্ণনা কর ।
উত্তর। ভূমিকা : বেসরকারি সঞ্চয় বৃদ্ধির দ্বারাই কেবল বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে স্বনির্ভরতা অর্জন সম্ভব । নিম্নে এজন্য কতকগুলো পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সুপারিশ করা হলো :
১. মেয়াদি আমানত বৃদ্ধি করা : বাংলাদেশের মোট বেসরকারি সঞ্চয়ের ৩০ ভাগই মেয়াদি আমানত থেকে আসে । দেশে মেয়াদি আমানত সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান আজও গড়ে উঠে নি । এছাড়া যেসব স্থানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে সেখানে মেয়াদি আমানতের প্রতি আস্থাশীল হওয়ার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে । বিভিন্ন প্রকার ঋণপত্র , শেয়ার , ডিবেঞ্চার , ডাকঘর সঞ্চয় হিসাব , প্রতিরক্ষা সঞ্চয়পত্র , Provident fund ও বিভিন্ন বীমা সংস্থার কার্যক্রমকে বিস্তৃত করে পর্যাপ্ত মেয়াদি ও সঞ্চয়ী আমানত সংগ্রহ দ্বারা বেসরকারি সঞ্চয় বৃদ্ধি করা সম্ভব ।
২. গ্রামীণ সঞ্চয় সংগ্রহ : গ্রামীণ মানুষের সঞ্চয় অনুৎপাদনশীল ও নিষ্ক্রিয় । তাই বাণিজ্যিক ব্যাংক , কৃষি ব্যাংক , ডাকঘর ও সমবায় ব্যাংক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে যথেষ্ট সঞ্চয় সংগ্রহ করা প্রয়োজন । প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানসমূহের শাখা – প্রশাখা বৃদ্ধি করতে হবে । এজন্য ভ্রাম্যমান ব্যাংকিং ব্যবস্থা দ্বারা সঞ্চয় সংগ্রহ করা যেতে পারে ।
৩. সঞ্চয় বৃদ্ধিতে উৎসাহ দান : দেশের জনগণের ব্যক্তিগত সঞ্চয় বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন যথেষ্ট উৎসাহ প্রদান । সঞ্চয়ের সুফল এবং ভবিষ্যৎ জীবন সম্পর্কে সজাগ করার জন্য বিভিন্ন বিজ্ঞাপন , বেতার ও টেলিভিশন সম্প্রচার ব্যবহার করা প্রয়োজন । বিনিয়োগের সুবিধা বৃদ্ধি করা এবং মুদ্রাস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে উচ্চ সুদের হার প্রদান করা প্রয়োজন ।
৪. শিক্ষার উন্নয়ন : শিক্ষিত জনশক্তি সচেতন । শিক্ষিতরা তাদের ভবিষ্যৎ আয় ও জীবনযাত্রা সম্পর্কে পূর্বপরিকল্পনা গ্রহণ করে । তাই শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়ন দ্বারা সঞ্চয় বৃদ্ধি সম্ভব ।
৫. মূলধন বাজার সৃষ্টি : ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছাড়াও সঞ্চয় বৃদ্ধির জন্য একটি মূলধন বাজার সৃষ্টি আবশ্যক । এজন্য আকর্ষণীয় মুনাফাসহ সরকারি সিকিউরিটি ও সুবিধা প্রদান করা যেতে পারে । এছাড়া মিউচুয়াল ফান্ড , বিনিয়োগ ট্রাস্ট সার্টিফিকেট বিক্রয় এবং বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারকে শুধুমাত্র ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতে ক্রয়বিক্রয়ের ব্যবস্থা করলে যথেষ্ট বেসরকারি সঞ্চয় সংগ্রহ করা যেতে পারে ।
৬. দেশীয় বীমা কোম্পানি : বাংলাদেশের বীমা ব্যবস্থা আজও অপরিচিত । বিভিন্ন ধরনের বীমা যেমন- শস্য বীমা , স্বাস্থ্য বীমা , এক্সপোর্ট , ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কীম , জনতা বীমা , গবাদিপশু বীমা , মটর বীমা , শিক্ষা বীমা , বিবাহ বীমা ও পেনশন স্কীম ইত্যাদি গ্রহণ করা সম্ভব ; কিন্তু যথোপযুক্ত সম্প্রচারের অভাবে জনগণ এ ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে অবহিত নয় ।
উপসংহার : এসব ব্যবস্থার সুফল জনগণকে অবহিত করতে হবে যাতে সামর্থ্যবান ব্যক্তিগণ বীমা গ্রহণ করে সঞ্চয় বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে ।
[ad_2]