প্রশ্নঃ বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বর্ণনা কর ।

[ad_1]

প্রশ্নঃ বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বর্ণনা কর ।

উত্তরা- ভূমিকা : মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ও সুপরিচিত শ্রমবাজার । সাম্প্রতিক সময়ে এ অঞ্চলে সংঘটিত রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানিতে ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে । সে জন্য সরকার বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে নতুন শ্রমবাজারের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে । তাছাড়াও বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণ উৎসাহিত করা ও দ্রুততম সময়ে প্রাপকের নিকট পৌছানোর উদ্দেশ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে । সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ : রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও বিদেশি শ্রমবাজার অনুসন্ধানে সরকার গৃহীত পদক্ষেপ নিম্নে তুলে ধরা হলো :

১. নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান : নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানের জন্য ৫ টি উচ্চ পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধি দল গঠন করা হয়েছে । ইরাক , রোমানিয়া , রাশিয়া , কানাডা ইত্যাদি দেশকে চিহ্নিত করা হয়েছে । তাছাড়া বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ইউরোপ ও আফ্রিকার শ্রমবাজার সম্প্রসারণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে ।

২. প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক স্থাপন : বিদেশে গমনেচ্ছু কর্মীদের সহায়তা দিতে ও বিদেশ হতে প্রত্যাগত কর্মীদের পুনঃকর্মসংস্থানে আর্থিক সহায়তা দিতে ওয়েজ আর্নার কল্যাণ তহবিলের অর্থায়নে স্থাপিত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক একটি বিশেষায়িত ব্যাংক । ব্যাংকটি গত ২০ এপ্রিল , ২০১১ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে ।

৩. জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর কল্যাণ শাখা স্থাপন : জনশক্তি , কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর আওতাধীন স্থাপিত একটি সেবাধর্মী শাখা হলো কল্যাণ শাখা । উক্ত শাখা প্রবাসে কর্মরত অবস্থায় মৃত বাংলাদেশি কর্মীদের মৃতদেহ দেশে আনয়ন , লাশ পরিবহন ও দাফনে সাহায্য করা , পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান , নিয়োগকর্তার নিকট থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় , ইন্সুরেন্স , বকেয়া বেতনের অর্থ বিতরণের ব্যবস্থা করা । আটকে পড়া কর্মীদের দেশে ফেরত আনাসহ ইত্যাদি কাজ করে থাকে । ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১২২ জন মৃতের উত্তরাধিকারিগণকে ১.১৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে ।

৪. বহির্গমন প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন : রিক্রুটিং এজেন্সি এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য হ্রাস ও প্রতারণারোধে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিংগার প্রিন্টসহ বিদেশগামী কর্মীর যাবতীয় তথ্য ডাটাবেজ নিবন্ধন করা হচ্ছে । ডাটাবেজ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে স্মার্ট কার্ডের সাহায্যে বহির্গমন ছাড়পত্র প্রদান করা হচ্ছে । স্মার্ট কার্ডে রেকর্ড থাকার কারণে বিমান বন্দরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কর্মীর এমবারকেশন কার্য প্রিন্ট হওয়ার ফলে বিমান বন্দরে কর্মীদের হয়রানি অনেকাংশে বন্ধ হয়েছে ।

৫. বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণে উৎসাহিতকরণ : বাংলাদেশে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণে উৎসাহিত করতে সরকার যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা নিম্নরূপ :

. বিদেশস্থ এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর সাথে বাংলাদেশস্থ ব্যাংকগুলোর ড্রায়িং ব্যবস্থা স্থাপনের অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে ।

. বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোকে বিদেশে এক্সচেঞ্জ হাউজ প্রতিষ্ঠার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন এবং এক্সচেঞ্জ হাউজ স্থাপনের অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে ।

. ১৬ টি Micro Finance Institution কে রেমিট্যান্স বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে ।

. ৪ টি ব্যাংককে রেমিট্যান্স এর অর্থ Mobile operator গুলোর outlets এর মাধ্যমে বিতরণের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে ।

. ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণকারিগণকে এককভাবে বা এদেশীয় উদ্যোক্তাদের সাথে যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে শিল্প স্থাপনের অনুমতি প্রদানের পাশাপাশি সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ ( FDI ) আকারে এদেশে বিনিয়োগের সুবিধা প্রদান করা হয়েছে ।

. প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য দেশে বিবিধ বিনিয়োগ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে ।

. বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার অন্তর্মুখী প্রবাহ বৃদ্ধি তথা অধিক রেমিট্যান্স প্রেরণকে উৎসাহিত করতে অধিক রেমিট্যান্স প্রেরণকারীকে সরকার কর্তৃক CIP মর্যাদা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়ন হলে বাস্তবিকই বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাবে ।

[ad_2]