প্রশ্নঃ বাংলাদেশের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য তুমি কী কী সুপারিশ করবে ?

[ad_1]

প্রশ্নঃ বাংলাদেশের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য তুমি কী কী সুপারিশ করবে ?

উত্তর : বাংলাদেশের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য সুপারিশসমূহ নিম্নরূপ :

১. অবৈধ অর্থ উপার্জন যে কোন মূল্যে বন্ধ করতে হবে ।

২. বাংলাদেশে কৃষি বলতে শুধু শস্য উৎপাদনকে বুঝানো হয় । বাস্তবে কৃষি শস্য উৎপাদন , মৎস্য চাষ , পশুপালন , ফলমূল চাষ এবং বনজ সম্পদকে অঙ্গীভূত করে এসব উপখাতে অল্প পুঁজিতে বেশি রুজি করা সম্ভব । সরকার কঠোর করনীতির মাধ্যমে সংগৃহীত রাজস্ব যদি শিক্ষিত ও কৃষি বেকারদের কর্ম নিয়োগের জন্য বিনিয়োগ করে তাহলে কৃষি বেকারত্ব ও শিক্ষিত বেকারত্ব বহুল পরিমাণে হ্রাস করা সম্ভব ।

৩. VAT অর্থনীতির প্রতিটি স্তরে দ্রব্যের প্রকৃতি অনুসারে বিভিন্ন হারে আরোপ করা প্রয়োজন ।

৪. রাজস্বনীতিতে কর ব্যবস্থা শক্তিশালী করা প্রয়োজন । কৃষিতে কর কাঠামো সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে । ভূমি কর প্রগতিশীল হারে আরোপ করতে হবে । ২৫ বিঘা জমির কর মওকুফ নীতি পরিহার করা উচিত । কৃষিতে সেচযোগ্য সকল জমিতে উচ্চ হারে সেচ কর আরোপ করে সংগৃহীত অর্থ দ্বারা কৃষকদেরকে স্বল্প মূল্যে সার , তেল বিতরণ করে প্রচুর রাজস্ব অর্জন করা সম্ভব ।

৫. আয়কর কাঠামো প্রগতিশীল করা প্রয়োজন ।

৬. দেশে যেসব শিল্পকারখানা সরকারি মালিকানায় রয়েছে এবং প্রতি বছর লোকসানের বোঝা সরকার বহন করছে , এসব শিল্পের মৌলিক সংস্কার করা প্রয়োজন । লোকসানের কারণ খুঁজে বের করা এবং অসৎ দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শাস্তির ব্যবস্থা করে শিল্পের মুনাফা বৃদ্ধি করা যেতে পারে । শুধু তাই নয় , যেসব শিল্পে আদৌ মুনাফার সম্ভাবনা নেই সেসব শিল্প ব্যক্তিমালিকানায় বিক্রি করে সরকার ভর্তুকির বোঝা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে । এসব শিল্পখাতে যে ভর্তুকির বোঝা ছিল তা থেকে জাতি পরিত্রাণ পেলে নতুন বিনিয়োগের ভাণ্ডার সৃষ্টি হতে পারে , নিয়োগ বৃদ্ধি করবে পুরোনো শিল্পসমূহে নতুন নিয়োগের পথ সৃষ্টি হতে পারে ।

৭. প্রতি বছর সরকার বিলাসবহুল পণ্যের উপর কর বৃদ্ধি অব্যাহত রেখে যদি সংগৃহীত রাজস্বসমূহ শিল্পখাতে বিনিয়োগ করে তাহলে নতুন নিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতি বেকারত্ব লাঘব করা সম্ভব ।

৮. দেশের বেকারত্ব হ্রাস করার জন্য সরকারি উন্নয়ন ব্যয় শ্রম বহুল নিয়োগ পদ্ধতিকে উৎসাহিত করতে পারে । সরকারি উন্নয়ন ব্যয়ের মাধ্যমে প্রতিটি থানায় একটি করে শিল্প নগরী ও কৃষি উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করা যেতে পারে । যার মাধ্যমে নতুন শিল্পোদ্যোক্তা যেমন পাওয়া যাবে , তেমনি অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বেকারত্ব লাঘব করা যাবে ।

৯. বাংলাদেশের বেকারত্ব হ্রাস করার জন্য ঘাটতি ব্যয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে । সরকার প্রতি বছর বেকারদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নিরপদ সীমায় ঘাটতি ব্যয়ের মাধ্যমে নতুন প্রকল্প এবং শিল্প গড়ে তুলতে পারেন । যা বেকারত্ব লাঘবে ভূমিকা রাখবে ।

১০ , কোরিয়া , তাইওয়ান , থাইল্যান্ড , হংকং এসব দেশসমূহ রপ্তানিভিত্তিক শিল্পায়ন দ্বারা যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে . এবং বেকারত্ব হ্রাস করেছে । এসব দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য সরকারি করনীতি , ভর্তুকি নীতি , ঋণনীতি সবই ভূমিকা রেখেছে । তাই শিল্পের কাঁচামাল এবং উৎপাদিত পণ্য বিক্রয়ের জন্য রাজস্বনীতিকে সহায়ক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে ।

উপসংহার : উপরের আলোচনা থেকে বাংলাদেশের বেকারত্ব দূরীকরণে রাজস্বনীতির বিভিন্ন হাতিয়ারসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই , এটি বলা যায় ।

[ad_2]