বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে তোমার মতামত দাও।

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১), বাংলা সাহিত্যের একজন দিকপাল ব্যক্তিত্ব, ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতজ্ঞ, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, দার্শনিক এবং সমাজ সংস্কারক। বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে তিনি বিশ্ব সাহিত্যের ক্ষেত্রেও অবদান রেখেছেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ৭ মে ১৮৬১ সালে  (বাংলা ১২৬৮ সালের ২৫ বৈশাখ) কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে। তার পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠাতা। মাতা সারদা দেবী। রবীন্দ্রনাথ আনুষ্ঠানিক স্কুলে পড়াশোনা করেননি। তিনি বাড়িতে শিক্ষকদের অধীনে শিক্ষা লাভ করেন। তারপর তিনি ১৭ বছর বয়সে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য বিলেত গেলেও দেড় বছর পর দেশে ফিরে. তিনি পিতার জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল পরিভ্রমণ করেন। 

কৈশোরকাল থেকেই রবীন্দ্রনা সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন।  ১৮৭৭ সালে ‘ভারতী’ পত্রিকায় তাঁর প্রথম ছোটগল্প ‘ভিখারিণী’ এবং প্রথম উপন্যাস ‘করুণা’ প্রকাশিত হয়। ১৮৮২ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সন্ধ্যা সংগীত’ প্রকাশিত হলে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁকে অভিনন্দিত করেন। এরপর রবীন্দ্রনাথকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বাংলা সাহিত্যের প্রত্যেকটি শাখায় তিনি নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্য রচনা করে প্রথম এশীয় হিসেবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

 তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে ‘মানসী’ (১৮৯০), ‘সোনার তরী’ (১৮৯৪), ‘চিত্রা’ (১৮৯৬), ‘ক্ষণিকা’ (১৯০০), ‘গীতাঞ্জলি’ (১৯১০), ‘বলাকা’ (১৯১৫) প্রভৃতি কাব্য; ‘চোখের বালি’ (১৯০৩), ‘গোরা’ (১৯১০), ‘যোগাযোগ’ (১৯২৯) প্রভৃতি উপন্যাস এবং নাটকের মধ্যে ‘বিসর্জন’ (১৮৮৯), ‘রাজা’ (১৯১০), ‘রক্তকরবী’ (১৯২৬) প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট (বাংলা ১৩৪৮ সালের ২২ শ্রাবণ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।