প্রশিকার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী? প্রশিকার গঠন কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা লিখ।

অথবা, প্রশিকার উদ্দেশ্যসমূহ কী কী? প্রশিকার গঠন কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা বর্ণনা কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা :
প্রশিকা ‘মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র’ বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় এনজিও। ১৯৭৬ সালে এ সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। Societies Registration Act-1860 এর অধীনে এনজিওটি নিবন্ধিত হয় যার নিবন্ধন নং ১৯৭৬-৭৭ এর ৫৫৬৩/২৩ (তারিখ ১ অক্টোবর ১৯৭৬)।পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালের ৬ জুলাই NGO Affairs Bureau তে এ এনজিওটি পুনরায় নিবন্ধিত হয় যার নিবন্ধন নং ১৪৭। প্রাথমিক পর্যায়ে এনজিওটি ঢাকা, কুমিল্লা, ও চট্টগ্রামের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাতে কর্মতৎপরতা শুরু করে। জুন ২০০৩ সালের তথ্য অনুযায়ী ‘প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্ৰ’ ৫৭টি
জেলার ২৬২টি থানার ২৩,২৯৪টি গ্রাম ও ২০৭০টি বস্তি এলাকায় তার কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। ১৯০টি উন্নয়ন কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশিকা মানবকল্যাণে অবদান রেখে চলেছে। প্রশিকা’র মোট প্রাথমিক সদস্য ২৬,৯৮,৫১১ জন যাদের মধ্যে মহিলা ১৬,৫৮,৩০৫ ও পুরুষ ১০,৪০,২০৬ জন। প্রশিকা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ৩১,৭৬৭টি গৃহনির্মাণ করেছে,২৬,১৭৫টি নলকূপ স্থাপন করেছে। প্রশিকার সুবিধাভোগীর পরিমাণ ১,১৪,১৬,৭৭৭ জন। বর্তমানে প্রশিকা মানবসম্পদ উন্নয়নে বহুমুখী কার্যাবলি পরিচালনা করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও আয়বর্ধনমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি প্রশিকা পরিচালনা করে যাচ্ছে।
প্রশিকা’র উদ্দেশ্য
প্রশিকার উদ্দেশ্যগুলো নিম্নে উপস্থাপন করা হলো :
১. কাঠামোগত দারিদ্র্য বিমোচন,
২. পরিবেশ সংক্ষণ ও পুনরুজ্জীবন,
৩. নারীদের মর্যাদার উন্নয়ন,
৪. সরকারি প্রতিষ্ঠানে জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিকরণ,
৫. গণতান্ত্রিক এবং মানবাধিকার অর্জন ও অনুশীলনে জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি,
৬. পরিবেশ সংরক্ষণ ও পুনরুজ্জীবন,
৭. লক্ষ্যদলকে সঞ্জয়ের মাধ্যমে নিজস্ব তহবিল গঠন করা,
৮. জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে জনগণকে সহায়তা করা।
৯. সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
১০. লক্ষ্যভুক্ত জনগোষ্ঠীকে সামাজিক অধিকার বিষয়ে সচেতন করা।
১১. দরিদ্র ও অনগ্রসর শ্রেণিকে সকল প্রকার শোষণ ও নির্যাতন থেকে রক্ষা করা।
সুতরাং বলা যায়, এদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক উন্নয়নের মাধ্যমে মানব সম্পদের উন্নয়ন ঘটানো প্রশিকার অন্যতম লক্ষ্য।
প্রশিকার গঠন কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা : প্রশিকার গঠন কাঠামোতে ২৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি সাধারণ পরিষদ (General Body), ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালনা পরিষদ এবং ৩৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট কমিটি রয়েছে। সাধারণ পরিষদের সদস্যগণ জনগণের বিভিন্ন অংশ থেকে আগত। এ পরিষদের সদস্যগণ বার্ষিক হিসেবে রিপোর্ট ও বার্ষিক বাজেট অনুমোদন করে। ৯ সদস্যবিশিষ্ট পরিচালনা পরিষদ নীতিনির্ধারণ ও উন্নয়ন পর্যালোচনা করে। প্রশিকার সভাপতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন, প্রশাসন’ পরিচালনা ও নীতিমালা উন্নয়নের সার্বিক দায়ভার বহন করেন।সভাপতি,সহসভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, পরিচালকমণ্ডলী এবং উপপরিচালকমণ্ডলী প্রশিকার সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তারা প্রশিকার সকল উন্নয়ন কর্মসূচির তত্ত্বাবধান করেন, নির্দেশনা দেন এবং সমন্বয়সাধনের ব্যবস্থা করেন।এছাড়া আর্থিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছেন একজন পরিচালক (অর্থ বিভাগ), দুই জন উপপরিচালক (অর্থ), একজন উপপরিচালক (আর্থিক সেবা বিভাগ) তাকে কাজে সাহায্য করেন।

উপসংহার : প্রশিকার বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সমন্বিত বহুমুখী নারী উন্নয়ন কর্মসূচি,প্রভাব পরিবীক্ষণ এবং মূল্যায়ন সেল কর্তৃক পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন, কর্তৃক বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশনা, কর্তৃক তথ্যসংগ্রহ,অন্যান্য সংস্থাকে সাহায্য কর্মসূচি,গবেষণা ও প্রদর্শন প্রকল্প মানবসম্পদ বিভাগ কর্তৃক প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। প্রশিকার এসব কর্মসূচি মানবকল্যাণে যথেষ্ট অবদান রেখে চলেছে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a4%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a8-%e0%a6%95/