প্রশাসনে তত্ত্বাবধানের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব আলোচনা কর ।

অথবা, মাঠকর্মে / মাঠকর্ম অনুশীলনে তত্ত্বাবধানের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধর।
অথবা, মাঠকর্ম অনুশীলনে তত্ত্বাবধানের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর।
অথবা, প্রশাসনে তত্ত্বাবধানের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা :
কোন এজেন্সির লক্ষ্যার্জনের জন্য তত্ত্বাবধান একান্ত প্রয়োজন। কেননা, তত্ত্বাবধান ছাড়া অধীনস্থদের কাছ থেকে কোন কার্যকরী ভূমিকা প্রত্যাশা করা যায় না। তাই তত্ত্বাবধান এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা হয়।
মাঠকর্ম অনুশীলনে তত্ত্বাবধানের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব
প্রশাসনের তত্ত্বাবধানের গুরুত্ব অনেক। নিম্নে তত্ত্বাবধানের গুরুত্ব আলোচনা করা হলো:
১. এজেন্সির লক্ষ্যার্জনে সহায়ক : তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক এবং কর্মী বা প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে খোলাখুলি আলোচনা হয়। যার ফলে তত্ত্বাবধায়কের পেশাগত জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, শিক্ষা প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে স্থানান্তরিত হয়।এবং সে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, কর্মসূচি, পরিকল্পনা এবং তার নিজের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে পারে; যা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জনে অনেকাংশে সহায়ক।
২. সেবার গুণগত মান বৃদ্ধিতে সহায়ক : তত্ত্বাবধানে সংস্থার চাহিদা, কর্মীর যোগ্যতা এবং কর্মসম্পাদনের সঠিক পন্থা অনুসন্ধান, কর্মীকে যথার্থ পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষাদান এবং কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যার্জন না হওয়া পর্যন্ত কর্মীকে ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। এভাবে কর্মীকে তার সেবার গুণগত মান বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৩. কর্মীদের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে : কর্মীদের মনোবল ও শক্তি বৃদ্ধি করা, নির্দিষ্ট কর্মক্ষেত্রে তার কর্তৃত্ব উদ্যোগী, ভূমিকা গ্রহণে সক্ষম করে তোলা এবং কর্মীর আত্মবিশ্বাস জাগ্রত করতে তত্ত্বাবধানের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
৪. সেবাদানের নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে : কোন এজেন্সির নতুন কর্মপদ্ধতি, কর্মসূচি এবং পরিকল্পনা গ্রহণ আর কর্মীদের পক্ষ থেকে তা বাস্তবায়নে তত্ত্বাবধানের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা, লক্ষ্য দলের অবস্থা, চাহিদা এবং মানসিকতার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মপন্থা বা কর্মপদ্ধতির সংশোধন করা হয়। পরিবর্তিত এসব নীতি, কর্মসূচি কর্মীদের মনে গ্রহণ, বাস্তবায়ন এবং সামঞ্জস্য বিধান উপযোগী করতে হলে তত্ত্বাবধান একান্ত প্রয়োজন।
৫. উত্তম পদ্ধতি শিক্ষাদান : তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে একটি কর্মের জন্য উপযুক্ত কর্মী নির্বাচন, প্রত্যেক কর্মীকে তার কর্মের প্রতি উৎসাহ সৃষ্টি, কর্ম সম্পাদনে উত্তম পদ্ধতি শিক্ষাদান, শিক্ষাদানের কার্যকারিতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে কর্ম সম্পাদন রেটিং এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সংশোধন করা হয়।
৬. সুষ্ঠু কর্মী ব্যবস্থাপনা বজায় রাখা : যথাযথ তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে ফলপ্রসূ সেবাদান করা সম্ভব। কেননা, সঠিক তত্ত্বাবধান কর্মীদের অমনোযোগিতা, অনুপস্থিতির হার হ্রাস এবং কর্মীদের বস্তুগত ও অবস্তুগত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার,অপচয় রোধ ও নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে কর্মী এবং তত্ত্বাবধায়কের মধ্যে পেশাগত জ্ঞান, যোগ্যতা,দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও ভাবের আদান প্রদান হয়। ফলে প্রশিক্ষণার্থী তার কর্মদক্ষতার ঘাটতি বুঝতে পারে এবং তা সংশোধনপূর্বক এজেন্সির লক্ষ্যার্জনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে। এককথায়, কোন প্রশিক্ষণার্থী কিংবা কর্মীকে তার দক্ষতা এবং বুদ্ধিমত্তা অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে তোলাই তত্ত্বাবধানের অন্যতম কাজ।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%8d/