প্রয়োজন হইলে তাহাতেও আপত্তি নাই, নিষ্প্রয়োজনই আপত্তি।”- ব্যাখ্যা

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বিরচিত ‘বাঙ্গালা ভাষা’ প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে রচনা সুন্দর ও প্রাঞ্জল করে তোলার স্বার্থে কিরূপ ভাষা ব্যবহার করা উচিত সে সম্পর্কে লেখক এ মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষণ : প্রাবন্ধিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মনে করতেন বিষয় অনুসারেই রচনার ভাষা নির্ধারিত হওয়া উচিত। রচনার প্রধান গুণ সরলতা ও স্পষ্টতা। যে রচনা সকলেই বুঝতে পারে এবং পড়ামাত্র যার অর্থ বুঝা যায় তা-ই সর্বোৎকৃষ্ট ভাষা। লেখার উদ্দেশ্য শিক্ষাদান এবং পড়া মাত্রই যার অর্থ বুঝা যায় তা-ই সর্বোৎকৃষ্ট রচনা। এরপর তাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করতে হবে। লেখক যা বলতে চান, প্রথমে দেখতে হবে কোন ভাষায় তা সুন্দরভাবে প্রকাশ পায়। যদি সরল প্রচলিত কথাবার্তায় তা সুস্পষ্ট ও সুন্দর হয়. তবে উচ্চ ভাষার আশ্রয় নেয়ার প্রয়োজন নেই। যদি এক্ষেত্রে আলালী বা হুতোমি ভাষায় কার্যসিদ্ধ হয় তবে তা-ই করতে হবে। যদি বিদ্যাসাগরীয় ভাষায় তা স্পষ্ট হয় তবে তা-ই ব্যবহার করা উচিত। প্রচলিত বাংলার পরিবর্তে যদি সংস্কৃতবহুল ভাষায় বক্তব্য ভালোভাবে প্রকাশ পায় তবে তা ব্যবহার করতে হবে। যদি তাতেও কার্যসিদ্ধ না হয় তবে আরো উপরে উঠা যাবে। এতে লেখকের কোন আপত্তি নেই । তাঁর আপত্তি কেবল নিষ্প্রয়োজনের বেলায়। অনাবশ্যক দুর্বোধ্য ভাষা ব্যবহারের বিরোধী তিনি।
মন্তব্য : রচনাকে সুন্দর করার জন্য যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা উচিত তা-ই করতে হবে। এক্ষেত্রে ভাষার উচ্চতা বা নীচতা বিচার্য বিষয় নয়।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be-%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%b7%e0%a6%be-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%ac%e0%a6%99/