উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতির পাহাড় সমান চাওয়া পাওয়ার পটভূমিতে অর্থনীতিকে একটি নতুন
দিক নির্দেশনা দানের উদ্দেশ্যে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পরিকল্পনায় প্রথম দুই বছরের ব্যর্থতার
প্রেক্ষিতে শেষ তিন বছরের জন্য একটি Hard care programme হাতে নেয়া হয়। প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় মোট ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৪৪৫৫ কোটি টাকা।
→ প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ নিম্নে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা ঃ
(ক) দীর্ঘকালীন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
১. যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতির পুনর্গঠন
২. দারিদ্র্য ও আয় বৈষম্য হ্রাস
৪. ক্রমান্বয়ে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় উত্তরণ।
৫. বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করে তাকে বিনিয়োগের শতকরা ২৭ ভাগে নামিয়ে আনা।
(খ) মধ্যমেয়াদি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
৫. বার্ষিক GDP প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ৫.৫ ভাগে উন্নীত করা ।
৬. ১৯৬৯-৭০ সালের উৎপাদন স্তরে উৎপাদন বৃদ্ধি ।
৭. বেকারত্ব উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাসের উদ্দেশ্য ৪ লক্ষ বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুবিধা সৃষ্টি করা।
৮. নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যসমূহের উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি করা এবং দামের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা।
৯. বাৎসরিক মাথা পিছু আয় শতকরা ২.৫ ভাগ হারে বৃদ্ধি করা।
(গ) স্বল্পকালীন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
১০. বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার শতকরা ৩ ভাগ থেকে কমিয়ে ২.৮ ভাগে নিয়ে আসা।
১১. কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা।
১২. বস্তুগত ও অবস্তুগত তথা আর্থ-সামাজিক ও মানবিক সম্পদের উন্নয়ন করা এবং উন্নয়ন ব্যয়ের হারকে সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত করা।
উপসংহার. পরিশেষে বলা যায় যে, পর্যাপ্ত সম্পদের অভাবে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার GDP কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সম্পদের স্বল্পতা অপর্যাপ্ত প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা, দক্ষ জনশক্তির অভাব, প্রতিকূল প্রাকৃতিক অবস্থা অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পরিকল্পনাটি যথাযথভাবে কাজ করতে পারেনি।