উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ স্বাধীনতার পূর্বে ব্যাপক উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে সমাজকল্যাণ পরিকল্পনার যাত্রা শুরু হলেও সেগুলো
ছিল অসমাপ্ত এবং অসংগঠিত, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা সংগঠিত উপায়ে সমাজকল্যাণ পরিকল্পনা গৃহীত হয়।
চলখিত পরিকল্পনার কর্মসূচিগুলো তুলে ধরা হলো :
১. দুঃস্থ মহিলা ও শিশু প্রশিক্ষণ পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন ঃ ১৯৭২-৭৩ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত মহিলা ও ক্রিয় শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণ প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৫৬টি কেন্দ্র চালু করা হয়। অসহায়তা ও দুঃস্থ পরিত্যক্ত শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৪টি শিশু
সদন পরিকল্পনার এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এতিম শিশুদের
সরকারি শিশু সদন ঃ
স্থাপনসহ ২২টি শিশু নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। এ নিরাপত্তার ব্যবদ্ধ করা হয়
৩. সোসিও ইকোনমিক সেন্টার ঃ মহিলাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে, হয়। ১৬০৩ সালে কিন্তু এর কার্যক্রম চালু করা হয় ১৯৭৩ সালে, ঢাকায় মিরপুর এবং রংপুরে এক ধরনের ২টি সেন্টারে বিক্রম চালা কলাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলার স্কিমটি গঠন করা চালু করা হয়েছে।
৪, শিশু কল্যাণ কর্মসূচি ঃ শিশুদের কল্যাণের জন্য সরকারি শিশুসদন, ১টি দিবাযত্ন কেন্দ্র, ১টি শিশু আলয় প্রভৃতি
পরিচালনা এবং ২৬টি বেসরকারি এতিমখানা ও রেজিস্টার্ড এতিমখানায় অর্থনৈতিক সহায়তা দান এ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। চাতাফা ৫, যুব কল্যাণ কর্মসূচি ঃ এ কর্মসূচির আওতায় যুবকদের সার্বিক কল্যাণে পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠিত সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র ও যুব হোস্টেলসমূহের উন্নয়ন এবং ১০টি যুবকল্যাণ কেন্দ্র স্থাপনে এ কর্মসূচি গৃহীত হয় F
→ দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কর্মসূচিসমূহ ঃ
১. পল্লি উন্নয়ন কর্মসূচি ঃ দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার পল্লি উন্নয়ন কর্মসূচিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা চত হয়। এ কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ অসুবিধাগ্রস্ত মানুষ যেমন- স্কুলবহির্ভূত কিশোর এবং যুবক মহিলা, ভূমিহীন, প্রভৃতিদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রামীণ সমাজসেবা কর্মসূচিকে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়।চত্রা জন্য এ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয় ২৭ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা। এ ক্ষেত্রে ১০৪টি উপজেলায় গ্রামীণ মিৗসমাজসেবা কার্যক্রমের প্রসার এবং ১৯৬টি কমিউনিটি সেন্টারের মাধ্যমে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এ ছাড়া ৭০টি মহাকুমার ৭০টি হস্তশিল্প কেন্দ্র খোলা হয়।
২. স্বেচ্ছামূলক সংস্থার জন্য সেবা কার্যক্রম ঃ দেশের স্বেচ্ছামূলক সংগঠনকে উৎসাহ সহায়তা ও সহযো এ কর্মসূচির অন্তর্গত। এ খাতে সর্বোচ্চ অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ ১৭ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা।
- ভিক্ষুক ও ভবঘুরে প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সমষ্টি সকলকে ভবঘুরেদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের জন্য কেন্দ্র স্থাপনের উপর যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করা হয়। এ উদ্দেশ্যে এ খাতে ৯ সমষ্টি সংগঠনের ভিক্ষাবৃত্তি উচ্ছেদ এবং কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।
শিশু কল্যাণ কর্মসূচি ঃ এ কর্মসূচির আওতায় শিশুদের কল্যাণে শিশুসদন ও
বেবীহোম স্থাপনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এ জন্য বরাদ্দ করা হয় ৪ কোটি নার দলিত ও তৎসংলগ্ন স্কুলের উন্নয়ন এবং লক্ষ টাকা।
৫. মানব সম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচি ঃ উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মানব সম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচি গৃহীত হয় এ খাতে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।
৬. সংশোধনমূলক কার্যক্রম ঃ অপরাধ ও কিশোর অপরাধ সংশোধনের জন্য এ কর্মসূচির আওতায় সংশোধনমূলক সেবার জন্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন প্যারোল সার্ভিস প্রবর্তন এবং প্রবেশন ও আফটার কেয়ার শক্তিশালী করার পদক্ষেপ গৃহীত হয়। এ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৪ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা।
৭. প্রশাসনিক দক্ষতা সৃষ্টিমূলক কর্মসূচি ঃ দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাতে এ খাতে বরাদ্দ ধরা হয় ১০ কোটি টাকা।।→ তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কর্মসূচি :
২. গ্রামীণ সমষ্টি উন্নয়ন ঃ এ কার্যক্রমের মূল্য লক্ষ্য ছিল গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারগুলো সংগঠিত করা এবং তাদের আয় বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন ইউনিয়ন ভিত্তিক সংগঠিত করা। শিশু যুবক, বয়স্ক জন সদস্যের সমন্বয়ে দল গঠন করা। তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ১০০টি উপজেলায় প্রতি পুরুষ ও মহিলাসহ
প্রতিটি উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নে উপরোক্ত কার্যক্রম চালু করা।
২. শিশুকল্যাণ কার্যক্রম ঃ বর্তমানে পরিচালিত সরকারি শিশু সদনগুলো শিশুদের সত্যিকার উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারছে না। তাই শিশুদের সত্যিকার মানসিক আবেগ ও সামাজিক বিকাশের স্বার্থে ৭৩টি শিশু সদনকে শিশু পরিবারে রূপান্তরের ব্যবস্থা করা যাতে করে শিশুরা যথাসম্ভব পারিবারিক পরিবেশে গড়ে উঠতে পারে।
৩. দৈহিক ও মানসিক পঙ্গুদের জনকার্যক্রম ঃ প্রয়োজনীয় পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সামাজিক বিধানের মাধ্যমে দৈহিক পঙ্গুদের জন্য পরিচালিত বর্তমান কেন্দ্রটি নতুন জায়গায় স্থানান্তর করা। নতুন কমপ্লেক্সে মানসিকভাবে অপরিপক্ক শিশুদের জন্য একটি অতিরিক্ত ইউনিটের ব্যবস্থা করা।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশে এ যাবৎকালে গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনাসমূহ
প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন তথা সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, যদিও এ সকল পরিকল্পনা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। তথাপি উন্নয়নের গতিধারাকে এটি অনেকাংশে ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হয়েছে।