পিনটির বয়স খুঁজিতে গেলে প্রাগৈতিহাসিক যুগে গিয়া পড়িতে হয়।” ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু ত্রিশোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম রূপকার বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘পুঁইমাচা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : কন্যা ক্ষেন্তির হাতের চুড়ি আটকানোর জন্য ব্যবহৃত একটি সেপটিপিনের বয়স প্রসঙ্গে সহায়হরির দারিদ্র্যকে ইঙ্গিত করে কথাটি বলা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : সহায়হরি চাটুয্যে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের গৃহকর্তা। তাঁর চালচুলোর ঠিক নেই দু’পয়সার মুরোদ নেই । নিত্য নিয়ত অভাবের সাথে যুদ্ধ করে সহায়হরিকে বেঁচে থাকতে হয়। তিনি চার কন্যার জনক। কন্যাদেরকে সহায়হরি ঠিকমতো খেতে দিতেও পারেন না। গ্রামের লোকদের কাছ থেকে চেয়ে-চিন্তে বিভিন্ন জিনিস নিয়ে এসে তাকে সংসার চালাতে হয়। বড় মেয়ে ক্ষেন্তি তার ছোট দুটি বোনকে নিয়ে ওপাড়ার রায়দের ফেলে দেওয়া পাকা পুঁইমাকের ডাঁটা কুড়িয়ে এনেছে খাবার জন্য। তার হাতে সরু সরু দু’পয়সা ডজন দামের কিছু কাঁচের চুড়ি। চুড়িগুলো একটা সেপটিপিন দিয়ে একসাথে আটকানো। এই পিনটি অতিশয় পুরানো। এর বয়স খুঁজতে গেলে প্রাগৈতিহাসিক যুগে গিয়ে পড়তে হয়। অর্থাৎ কবে যে পিনটি কেনা হয়েছে তার হিসেব কেউ জানে না। সহায়হরি দরিদ্রাতিদরিদ্র। মেয়েদের নতুন চুড়ি বা সেপটিপিন কিনে দেওয়ার সামর্থ্য তাঁর নেই। এ কারণেই ক্ষেন্তির হাতে অতিশয় পুরানো সেপটিপিন শোভা পাচ্ছিল। এই সেপটিপিনের চেহারার মধ্য দিয়ে সহায়হরি চাটুয্যের দারিদ্র্যের ছবিটি ফুটে উঠেছে।
মন্তব্য : মানুষের দারিদ্র্যের পরিচয় পাওয়া যায় তার ব্যবহৃত পোশাক ও সাজসজ্জার মধ্যে। ক্ষেন্তির হাতের সেপটিপিনটি তার পিতামাতার দারিদ্র্যের পরিচায়ক।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%aa%e0%a7%81%e0%a6%81%e0%a6%87%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a6%be-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%b7/