পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ কর।

অথবা, পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির প্রকারভেদ উল্লেখ কর।
অথবা, পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি কত প্রকার ও কী কী?
অথবা, পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির ধরনসমূহ তুলে ধর।
থবা, পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিকে কত ভাগে ভাগ করা যায়।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে পর্যবেক্ষণ করার অনেক কিছু বর্তমান । বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রাথমিক হাতিয়ার হিসেবে পর্যবেক্ষণ ব্যবহৃত হয়। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান ছাড়াও সামাজিক বিজ্ঞানে পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব অপরিহার্য। তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত দায়িত্বের পরিচয় দেয় এবং নির্ভুল তথ্যের উন্মেষ ঘটাতে সাহায্য করে, যা গবেষণার জন্য অতি জরুরি ।
পর্যবেক্ষণের শ্রেণিবিভাগ : নিম্নে পর্যবেক্ষণের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করা হলো :
১. কাঠামোগত পর্যবেক্ষণ : সাধারণত কার্যকারণ সম্পর্কযুক্ত পূর্বানুমান যাচাই কিংবা ঘটনার সুশৃঙ্খল বর্ণনা প্রদানের উদ্দেশ্যে কাঠামোগত পর্যবেক্ষণ অধিকাংশ গবেষণায় ব্যবহৃত হয় ।
২. অবকাঠামোগত পর্যবেক্ষণ : এ পর্যবেক্ষণে গবেষণার কোন পর্যায়ের জন্য পূর্বপরিকল্পনা অথবা নিয়ন্ত্রণ থাকে না ফলে কি পর্যবেক্ষণ করা যুক্তিসংগত হবে তা পর্যবেক্ষণের পূর্বে বুঝে উঠা যায় না ।
৩. নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ : এ পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ কৌশল ব্যবহার করে ঘটনার মধ্যকার কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করা হয় । পর্যবেক্ষক এখানে পূর্বপরিকল্পিত কৌশল ব্যবহার করেন বলে পর্যবেক্ষণের প্রায় সবই কাঠামোবদ্ধ হয় ।
৪. অনিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ : এ পদ্ধতিতে বাইরের নির্দেশ অথবা প্রভাবমুক্ত থেকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক বা বাস্তবিক পরিবেশে বিষয় বা ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা হয় ।
৫. অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ : পর্যবেক্ষণে পর্যবেক্ষক স্বয়ং পর্যবেক্ষণীয় দল বা সম্পদায়ের সাথে যুক্ত হয়ে তথা বসবাস করে তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড অংশগ্রহণের মাধ্যমে উপাত্ত সংগ্রহ করে তাকে অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ বলে ।
৬. অংশগ্রহণহীন পর্যবেক্ষণ : যে পর্যবেক্ষণে গবেষক নিজে পর্যবেক্ষণীয় গোষ্ঠী বা সংস্থার আচরণ ও কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে না কিন্তু সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠী বা সংস্থার স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করেন তাকে অংশগ্রহণবিহীন পর্যবেক্ষণ বলে ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, কোনো সামাজিক ঘটনার গভীরে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির গুরুত্ব অপরিসীম। সমাজ গবেষকগণ পর্যবেক্ষণের স্থান, পর্যবেক্ষণের প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে পর্যবেক্ষণের উল্লিখিত শ্রেণিবিভাগ করেছেন । আর উপর্যুক্ত প্রতিটি পদ্ধতিই কার্যকরী অবদান রাখে ।