অথবা, পরিবারের প্রকৃতি আলোচনা কর।
অথবা, পরিবারের বৈশিষ্ট্যাবলি আলোচনা কর।
অথবা, পরিবারের বৈশিষ্ট্য তুলে ধর।
উত্তর৷ ভূমিকা : পরিবার একটি ক্ষুদ্রতম, প্রাচীন সামাজিক প্রতিষ্ঠান, যা সাধারণত বিবাহের মাধ্যমে পিতা-মাতা এবং একক বা একাধিক সন্তান নিয়ে গঠিত। মানুষ সামাজিক জীব, মানুষের সমাজ গঠিত হয় ছোট ছোট কতকগুলো গোষ্ঠী নিয়ে । আর পরিবার হলে। সে গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ক্ষুদ্রতম ও প্রাথমিক এবং সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান ।
পরিবারের বৈশিষ্ট্য : ছোট-বড় সকল সামাজিক সংগঠনের মধ্যে পরিবারই একমাত্র সংগঠন, যার রয়েছে সমাজতান্ত্রিক তাৎপর্য। নিম্নে সংক্ষেপে পরিবারের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. সর্বজনীনতা : পরিবার হচ্ছে একটি সর্বজনীন গোষ্ঠী। এটি মানব ইতিহাসের প্রথম প্রতিষ্ঠান। এটি সভ্যতার প্রত্যেক যুগে এবং প্রত্যেক সমাজে বিদ্যমান। শুধু তাই নয়, বিশ্বের সর্বত্র এটি বিভিন্ন রূপে লক্ষণীয় । সুতরাং পরিবাকে একটি সর্বজনীন গোষ্ঠী বলে গণ্য করা হয়।
২. অনুভূতি ও সূচকভিত্তি : পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পরস্পরের সম্পর্কের বিষয়টি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। পরিবারের অন্তর্ভুক্ত সকল সদস্যর মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও নিবিড়। এ সম্পর্কে সৃষ্টি হয় গভীর অনুভূতিপূর্ণ আন্তরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে।
৩. সামাজিক নিয়মকানুন : পরিবার কতক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত সামাজিক প্রথা ও আইনকানুনের দ্বারা সংরক্ষিত থাকে। পরিবারের কোন সদস্যের পক্ষে সহজে এসব অমান্য করা সম্ভব নয়। পরিবার এমন ধরনের গোষ্ঠী, যেখানে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে নরী-পুরুষ স্বাধীনভাবে প্রবেশ করতে পারে।
৪. গঠনমূলক প্রভাব : প্রত্যেকটি পরিবার তার সদস্যদের উপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। এটি পরিবারভুক্ত ব্যক্তিবর্গের চরিত্র গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। ব্যক্তির জন্মলগ্ন থেকে পরিবার যেরূপ প্রভাব বিস্তার করে, সেরূপ তার ব্যক্তিত্বের কাঠামো গড়ে উঠে।
৫. সীমিত আকৃতি : জৈবিক প্রয়োজনের তাগিদে পরিবার সৃষ্টি হওয়ার কারণে পরিবারের আকার হয় অত্যন্ত ক্ষুদ্র । পরিবারের সরলতম রূপ হলো একক পরিবার। এ একক পরিবারে কেবল স্বামী-স্ত্রী এবং এক বা একাধিক সন্তান নিয়ে গঠিত হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পরিবার অন্যতম। তবে অন্যান্য সামাজিক গোষ্ঠীর তুলনায় পরিবার যে স্বতন্ত্র ধরনের তা অস্বীকার করা যায় না। পরিবার হলো ক্ষুদ্রতম একটি রক্তের সম্পর্ক গোষ্ঠী।