পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো বর্ণনা কর ।

উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ বিরাজমান আর্থ-সামাজিক জটিলতা, পশ্চাৎপদতা, দারিদ্র্য, বেকারত্বসহ বহুবিধ আর্থিক সমস্যার
মধ্যে একটি সমৃদ্ধ অর্থনীতি ও সুষম সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার আশাবাদ নিয়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন সময় গৃহীত বেশ কয়েকটি পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা সর্বশেষ ১৯৯৭-২০০২ মেয়াদ পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রণয়ন করা হয়। শি। বর্তমানে এর মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও কার্যকারিতা এখনও বিদ্যমান
→ পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যসমূহ ঃ নিম্নে পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আলোচনা করা হলো চা
১. অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঃ পরিকল্পনার গড়ে ৭% প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে চূড়ান্ত বছরে এই প্রবৃদ্ধি ৮.৩% এ ঢা িউন্নীত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে কি না RO বিভিন্ন খাতে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ও কৃষিখাতে। ৪ শতাংশ, শিল্পখাতে। ১৩.৯৪%, নির্মাণ
গ্যিাস দ্বতীয়াতে, ২৩%, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৭.৫১%, বাসস্থান খাতে উ:৫৪%, স্বাস্থ্য খাতে ৬.৪%, শিক্ষাখাতে ৭৯% এবং বাণিজ্য খাতে ৬% হবে। Jী কক্রাপ্রধান প্রধান খাদ্যের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা : পরিকল্পনার শেষবর্ষে অভ্যন্তরীণ জাতীয় উৎপাদনে কৃষি এবং শিল্পখাতের অবদান যথাক্রমে ২৫.৭৮% এবং ১২.৭% হবে। মোট খাদ্য উৎপাদন ই.৪৪ কোটি টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে উন্নীত হবে।
পক্ষান্তরে, বাণিজ্যিক পণ্য পাটজাত দ্রব্যের উৎপাদন ১৭ টনে উন্নীত হবে। কৃষিপণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে শস্যের নিবিড়তা
মিলিয়ন বেল থেকে ৭.২৪ মিলিয়ন বোলে
১৮৫% থেকে ১৯২% এ বৃদ্ধি fe তুলা উৎপাদন বাড়বে ১ লক্ষ টন থেক ২ লক্ষ টন সুতা এবং কাপড় উৎপাদন ১৯২৩ কোটি গজ এবং ১৯৬৩ মিটার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে যথাক্রমে ৫২.২ কোটি গজ এবং ৩৬৪.১ কোটি মিটারে বৃদ্ধি পাবে। সার এবং সিমেন্টের উৎপাদন ২১৫৩ এবং ৯৪৭ হাজার মেট্রিক টন থেকে ২৫/৪৫এিবং ২৩৩ হাজার মেট্রিক টনে হবে । বিদ্যুৎ উৎপাদন ২১৪৮ মেঘাওয়াট থেকে ৫৭৩৯ মেঘাওয়াটে বৃদ্ধি পাবে। চিকে কটা
। ৪, দারিদ্র্য, শিক্ষা এবং নিয়োগ ও পরিকল্পনার সময়সীমায় শিক্ষার হার ৪৭% থেকে ৪০% এ উন্নীত হবে। দারিদ্র্য
সীমায় বসবাসকারী জনসংখ্যা ৪৭%, থেকে হ্রাস পেয়ে ৩৩%, এ উপনীত হবে। পক্ষান্তরে অতিরিক্ত অ৬৩ কোটি নতুন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
উন্নী
৫. সঞ্চয়, বিনিয়োগ এবং ব্যয় বরাদ্দ ঃ জাতীয় সঞ্চয় হবে, মোট জাতীয় উৎপাদনের ১২% এবং বিনিয়োগ হবে ২২% এর মত। পরিকল্পনায় মোট ব্যয় বরাদ্দ ১৯৬০ বিলিয়ন কোটি টাকার মধ্যে ৪৫% সরকারি খাতে এবং বাকী ৫৫% বেসরকারি খাতে ব্যয় করা হবে। মোট ব্যয় বরাদ্দের ৭৭.৫৬% অভ্যন্তরীণভাবে সংগ্রহ হবে।
৬. জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ৪ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩২- এ হ্রাস করা হবে।
→ পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার উদ্দেশ্যসমূহ নিম্নে তুলে ধরা হলো ঃ
প্রথমতঃ প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য বলা যায় ।
দ্বিতীয়ত ঃ দারিদ্র্য দূরীকরণ বিশেষত পল্লি অঞ্চলের দারিদ্র্যসীমায় বসবাসকারী লোকদের দারিদ্র্যের মাত্রা হ্রাস করা। ক্ষুদ্র এবং ভূমিহীন কৃষকরাও এই কর্মসূচির আওতায় আসবে।
তৃতীয়ত ঃ নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। এই উদ্দেশ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির উপর বেশি গুরুত্ব পরিকল্পনায় আরোপ করা হয়েছে।
চতুর্থত ঃ মানব সম্পদের উন্নয়নের উপর সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এই জন্য বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা এবং ভোকেশনাল প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া নারী শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
পঞ্চমতঃ বেসরকারি খাতের উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি করা। এই জন্য অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিসহ শক্তি, গ্যাস, কয়লা এবং অপরাপর প্রাকৃতিক সম্পদের উন্নয়নের উপ র গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
বৰ্তত ঃ তুলনামূলক ব্যয় সুবিধা নীতির আলোকে শিল্পের উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ।
সপ্তমতঃ মাতৃমঙ্গল, শিশু চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সুবিধার সম্প্রসারণ করা হবে। পাশাপাশি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতির প্রয়োগ এবং সম্প্রসারণ ও পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হিসাবে রাখা হয়েছে।
অষ্টমত ঃ সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সম্প্রসারণসহ আয় বৈষম্য হ্রাসের
উপর গুরুত্ব আরোপ। সম্প্রসারণ।
নবমত ঃ আন্তজার্তিক ব্যাপারে যেসব দ্রব্যের মূল্য আপেক্ষিকভাবে বেশি সেগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধি করে রপ্তানি
দশমত ঃ স্বল্পমেয়াদের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন যাতে মানুষের দৈনন্দিন ক্যালরি গ্রহণ ১৯৫০ কিলো ক্যালরি থেকে ২৩০০ কিলো-ক্যালরীতে উন্নীত হয়।
একাদশ ৪ পল্লি অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণের প্রক্রিয়া শক্তিশালী করার পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন। এ ক্ষেত্রে কার্যরত বিভিন্ন এন.জি. ও এর সাহায্যে সহযোগিতা নেওয়া হবে।
উপসংহার।. পরিশেষে বলা যায় যে, স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশে এ যাবৎকাল গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনাসমূহ প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন তথ্য সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করলে বলা যায় যে, যদিও এ সকল পরিকল্পনার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। তথাপি উন্নয়নের গতিধারাকে এটি অনেকাংশে ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হয়েছে।