উত্তর : আলোচ্য অংশটুকু প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শামসুদ্দীন আবুল কালাম বিরচিত ‘পথ জানা নাই’ শীর্ষক ছোটগল্পের গহুরালির। নতুন সড়ক তৈরির ব্যাপারে গ্রামের মৌলবি সাহেবের নেতিবাচক প্রশ্নর কথা তুলে ধরে স্ত্রী হাজেরা যে বক্তব্য রেখেছে তা খণ্ডন করতে গিয়ে গহুরালি আলোচ্য উক্তিটি করেছে। মাউলতলা দক্ষিণ বাংলার একটি নিস্তরঙ্গ গ্রাম। নতুন দুনিয়ার সাথে বিচ্ছিন্ন গ্রামটিতে চল্লিশ বছর পর বাইরে থেকে ফিরে এসে জোনাবালি হাওলাদার গ্রামবাসীকে নতুন জীবনের খবর শোনাল। সে একটি সড়ক নির্মাণ করে শহরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে ব্যবসায়-বাণিজ্যের উন্নতি করার জন্য সকলকে উজ্জীবিত করে তুলল। সড়ক নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি গ্রামবাসীদেরই ছাড়তে হবে। গহুরালি এই গ্রামেরই বাসিন্দা। তার পাঁচ কুড়া জমির দুই কুড়াই সড়কে পড়েছে। জোনাবালির যুক্তির কাছে হার মেনে এবং নতুন জীবনের প্রত্যাশায় সে জমি ছাড়তে রাজি হলো। কিন্তু গহুরালির স্ত্রী হাজেরা ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছিল না। গহুরালি হাজেরাকে বুঝাতে শুরু করল জোনাবালির শেখানো যুক্তিতর্ক দিয়েই। সে বলল যে, সকলের মঙ্গলের জন্য সকলকেই কিছু ত্যাগ করতে হয়। হাজেরা স্বামীর সঙ্গে তর্ক করতে গিয়ে গ্রামের মৌলবি সাহেবের নেতিবাচক কথা, “বেশ আছি আমরা, রাস্তা ফাস্তা বানাইয়া এম্নে ওম্নে গেলে জীবনে আরও কষ্ট বাড়বে ছাড়া কমবে না” গহুরালিকে শুনিয়ে দিল। গহুরালি তা খণ্ডন করে বলল, “থুইয়া দেও হের কথা। নোতুন কোন জিনিস করতে গেলে একদল মানুষ চাইর দিক দিয়া এরহম বাধা দেয়ই।” গহুরালির কথাটা বাস্তব সত্য বটে। ভালো কাজের বেলায় সকলেই একমত হয় না। কেউ কেউ বিভিন্নভাবে ভালো কাজে বাধা সৃষ্টি করে।